ঢাকা: দেশের উৎপাদিত ফুল বাজারজাতকরণে রাজধানীর গাবতলিতে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত পাইকারি বাজার উদ্বোধন করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। এ সময় তিনি ফুল বাজারজাত করণে সড়কের উন্নয়ন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পাইকারি মার্কেটটি উদ্বোধন করেন তিনি। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ মার্কেটে ফুল কাটিং, ওয়াশিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ফুল এখানে প্রক্রিয়াকরণ করে রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে পৌঁছানো হবে।
মার্কেটটির আয়তন ৫২ হাজার বর্গফুট। থাকবে ২৫০ থেকে ২৬০ দোকান। যারা রাজধানীর শাহবাগ ও আগারগাঁওয়ে পাইকারি ফুল বিক্রি করেন তাদের এ মার্কেটে স্থানান্তর করা হবে। এতে করে পাইকারি বিক্রেতারা অনুকূল পরিবেশে ফুল বিক্রি করতে পারবেন ও তাদের প্রক্রিয়াকরণ সময় নষ্ট কম হবে। কৃষকরাও সরাসরি ফুল বিক্রি করতে পারবেন। তাতে উভয় পক্ষ লাভবান হবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ফুল বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে সড়কের উন্নয়ন হয়েছে। যশোর থেকে ফুল তুলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকাতে চলে আসতে পারছে। সরকার সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে কৃষিকে যেমন আধুনিক ব্যবস্থায় রূপান্তর ও বহুমুখী করেছে। অবকাঠামোর উন্নয়নের মাধ্যমে তা বিপণনের ব্যবস্থাও করেছে। কৃষকরা যাতে এ সুবিধা কাজে লাগাতে পারে। আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত মার্কেট করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ফুল বাজারজাতকরণের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে। আজ যে মার্কেটের উদ্বোধন হলো- পর্যায়ক্রমে এর সুবিধা আরও বাড়ানো হবে।
দেশে ডলার সংকটের মূলে এক শ্রেণির অসাধু কাজ করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এলসি সমস্যায় অনেক চাষি বিদেশ থেকে ফুলের চারা আনতে পারেননি। যারা ডলার চুরি করে তাদের প্রতিরোধ করা আমারও দায়িত্ব। এখানে আমার কিছুটা ব্যর্থতা থাকতে পারে। মন্ত্রী হিসেবে আমি দায়িত্ব এড়াতে পারি না। আপনারা জানেন বিরাট চক্র কাজ করে। এ চক্র সারা পৃথিবীতে সক্রিয়। তাদের মোকাবিলা করা কঠিন। প্রধানমন্ত্রী নিরলস পরিশ্রম করে, কঠোর পরিশ্রম করেন অর্থনীতিকে যারা ধ্বংস করতে চায়, লুটে খায় তাদের মোকাবিলা করার জন্য।
আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, কৃষিক্ষেত্রে অনেক সম্ভাবনা আছে। এই মার্কেট অনেক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। আগে ফুলের এমন চাষাবাদ ছিল না। জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ফুলের বহুমুখী ব্যবহার। বিদেশেও ফুল রপ্তানি করা হচ্ছে।
আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে আছি। আমাদের গতি আরও ত্বরান্বিত করতে হবে। তার জন্য দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের উন্নয়ন সারা পৃথিবী প্রশংসিত, নন্দিত। জনগণ শেখ হাসিনাকে আরেকবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করবে। আর জনগণ যদি আমাদের প্রত্যাখ্যান করে, ভালো। আমরা স্যালুট দিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে চলে যাবো। এর ব্যত্যয় হবে না।
বিরোধী দল জ্বালা-পোড়াও সন্ত্রাস করে সরকারের পতন চায়। আন্দোলন করে, সন্ত্রাস করে, অবরোধ করে সরকারের পতন ঘটান যাবে না। এই সরকারের ভিত্তি জনগণ। আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে, তৃণমূলে। মাটির অনেক গভীরে। ইচ্ছা করলেই সন্ত্রাস করে, ভয় দেখিয়ে, গাড়ি পুড়িয়ে, মানুষকে হত্যা করে আওয়ামী লীগের পতন ঘটানো যাবে না।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাসুদ করিম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তাজুল ইসলাম পাটোয়ারীর ও ফুল ব্যবসায়ী নেতা বাবুল প্রসাদ। ফুল চাষি, পাইকারি ফুল বিক্রেতা ও মার্কেট ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাও উপস্থিত ছিলেন এ অনুষ্ঠানে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
জেডএ/এমজে