ঢাকা: নোবেল পুরস্কার পেলেও কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমনটি বলেন।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ফেসবুকে আমি দেখলাম যে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হচ্ছেন। আবার ফেসবুকে এটিও দেখেছি, বিএনপি হিরো আলমকে পছন্দ করেছে। আসলে এগুলো ফেসবুকের প্রচার-অপপ্রচার যাই বলেন না কেন, এগুলো নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না।
তিনি বলেন, কেউ নোবেল পুরস্কার পেলে কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান হলে বা প্রধানমন্ত্রী হলেও তিনি তো আইনের ঊর্ধ্বে নন। এ দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিচার হয়েছে এবং সাজা ভোগ করছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নোবেল বিজয়ীদের বিচার হয়েছে এবং তারা জেলও খেটেছেন। এমন উদাহরণ আছে। আমাদের বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ।
হাছান মাহমুদ বলেন, মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা রেখে বলছি, সত্যটা হলো, শ্রমিকদের ৫ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দেওয়ার কথা ছিল, যার পরিমাণ হলো ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। সেটি তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে এবং ঘুষ দিয়ে ৪০০ কোটি টাকায় নামিয়েছিলেন। সেটিও তিনি পরিশোধ করেননি। সে জন্য বিচার হচ্ছে। আরও অনেক মামলা আছে। কেউ তো আইনের বা বিচারের ঊর্ধ্বে নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার হচ্ছে। আমাদের দেশের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিবৃতি দেওয়া, এটি তো আমাদের দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল। সেজন্য বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক সমাজ এবং সাংবাদিকরা এর বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশের উদ্বোধন নিয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পুরো দেশ আজ বদলে গেছে, ঢাকা শহর তো বটেই। ১৪ বছর আগে ঢাকা শহর থেকে চলে যাওয়া কেউ যদি এখন আসেন, তাহলে এই শহরকে চিনতে পারবেন না। একই চিত্র বাংলাদেশের অন্য শহর ও গ্রামের। দেশ আজ সত্যিকার অর্থে এগিয়ে গেছে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় একটি অবিস্মরণীয় অধ্যায়।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তাদের নেতাদেরও এই প্রশ্ন করতে পারেন। এই উন্নয়নের মাইলফলক নিয়ে তারা কী বলেন, তা শোনার অপেক্ষায় আছি। তারা চোখ থাকলেও দেখেন না, কান থাকতেও শোনেন না।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য সারা পৃথিবীতে বেড়েছে। তুরস্কে মূল্যস্ফীতির হার ৮২ শতাংশে উঠেছিল। পাকিস্তানে ৩২ শতাংশের উপরে গিয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১০ শতাংশ, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ১০ থেকে ২০ শতাংশ, রাষ্ট্রভেদে কোনো দেশে ১০ শতাংশ, কোনো দেশে ২০ শতাংশ, জ্বালানির ক্ষেত্রে আরও বেশি। আমাদের দেশে মূল্যস্ফীতি ৮-৯ শতাংশ। অন্য দেশের তুলনায় অনেক কম আছে। তবে এতে জনগণের যে অসুবিধা হচ্ছে, সে বিষয়ে আমরা ওয়াকিবহাল।
তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যাতে জনগণের অসুবিধা না হয়। সে জন্য নানা ধরনের কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। টিসিবির মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে পণ্য বিতরণ করা হচ্ছে। এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হয়েছে। আরও ৫০ লাখ মানুষকে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে, ২০ টাকা দামে। এভাবে এবং বিনামূল্যেও চাল দেওয়া হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে বাংলাদেশে। তারা কোনো অজুহাত পেলেই দাম বাড়ানোর চেষ্টা করে। এদের বিরুদ্ধে আসলে আমাদের একটি সামাজিক প্রতিরোধ দরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩,২০২৩
জিসিজি/আরএইচ