মাদারীপুর: মাদারীপুরের শিবচরে প্রাক্তন স্ত্রীর অন্যত্র বিয়ে ঠিক হওয়ার খবরে ক্ষুব্ধ হয়ে অ্যাসিড ছুড়ে মারেন প্রাক্তন স্বামী।
অ্যাসিডে ঝলসে যাওয়া সেই গৃহবধূ সাদিয়া আক্তার দীর্ঘ ২৫ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মারা গেছেন।
জানা গেছে, শিবচরের মাদবরচর এলাকার সিরাজ শিকদারের ছেলে সুমন শিকদারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে ওই এলাকার লিটু হাওলাদারের মেয়ে সাদিয়ার। সুমন তখন স্পিডবোট চালকের পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। চার বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। তবে সুমন বিয়ের পর থেকেই স্ত্রী সাদিয়ার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। একইসঙ্গে মাদকাসক্তও ছিলেন এবং ঠিকমতো কাজ না করায় পরিবারে কলহের সৃষ্টি হতে থাকে। একপর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে সাদিয়া তালাক দেন সুমনকে। এরপরে সাদিয়ার অন্যত্র বিয়েও ঠিক হয়। এই খবরেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন সুমন। পরে ১৬ আগস্ট রাতে সুমন সাদিয়ার ওপর অ্যাসিড ছুড়ে মারেন। এতে সাদিয়ার মাথা, মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ মারাত্মকভাবে ঝলসে যায়। এরপর থেকেই ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিল অ্যাসিড দগ্ধ সাদিয়া।
এ ঘটনার পরদিন সাদিয়ার বোন তাছলিমা আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় সুমনসহ পাঁচজনের নামে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনে একটি মামলা করেন। এরপরে ২৪ আগস্ট রাতে অভিযুক্ত সুমনকে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মাঝিরচর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে মাদারীপুর জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা।
২৫ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ দুপুরে সাদিয়ার মৃত্যুর খবর এলাকায় এলে শোকের ছায়া নেমে আসে। এ ঘটনায় জড়িত সুমনসহ অন্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান স্বজন ও এলাকাবাসীরা।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় অ্যাসিড দগ্ধ সাদিয়া শনিবার দুপুরে মারা গেছেন বলে আমরা খবর পেয়েছি। সন্ধ্যায় তার মরদেহ বাড়িতে আনা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৩
এএটি