ঢাকা: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুমোদন ছাড়াই ব্রিটিশ আমেরিকা টোব্যাকো (বিএটি) কোম্পানির ২০৫৪ কোটি টাকার রাজস্ব মওকুফ করে দিয়েছে বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ-ভ্যাট)।
এত বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি ও মওকুফের ঘটনা এ দেশে বিরল উল্লেখ করে এ রাজস্ব ফাঁকি জরিমানাসহ আদায় নিশ্চিত করার পাশাপাশি দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ তিন দফা দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খা হলে 'বিএটি’র ২০৫৪ কোটি টাকা রাজস্ব মওকুফের প্রতিবাদে' আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে তিন দফা দাবি পেশ করেন ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি আমিন উদ্দিন। দাবিগুলো হলো-বিএটির কাছ থেকে ২০৫৪ কোটি টাকা রাজস্ব জরিমানাসহ আদায় নিশ্চিত করা; যথাযথ তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ; এবং বিড়ি শিল্প রক্ষার্থে বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানির নিম্নস্তরের সিগারেট বন্ধ করা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, একটি জাতীয় দৈনিকে ‘বিএটির ২০৫৪ কোটি টাকা রাজস্ব মাফ!’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। অনুমোদনহীন একটি কমিটির সুপারিশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুমোদন ছাড়াই ব্রিটিশ আমেরিকা টোব্যাকো (বিএটি) কোম্পানির ২০৫৪ কোটি টাকার দাবিনামা মওকুফ করে দিয়েছে বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ-ভ্যাট)। স্বাধীন বাংলাদেশে এত বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি ও মওকুফের ঘটনা বিরল। শ্রমঘন বিড়ি শিল্প ও দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে যেসব অসাধু কর্মকর্তা এ অবৈধ রাজস্ব ফাঁকি মওকুফ করে দিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পরিহারকৃত রাজস্বের সঙ্গে সুদ আদায় না করা, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) কার্যক্রমের আওতায় গুটিকয়েক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ সুবিধা দেওয়াসহ বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এলটিইউ-ভ্যাটের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ যাচাই করতে এনবিআরের এক সদস্যের নেতৃত্বে কমিটি কাজ করছে। এরই মধ্যে বিএটির দুই হাজার ৫৪ কোটি টাকা দাবিনামা মওকুফের বিষয়টি নজরে আসে এনবিআর চেয়ারম্যানের। ব্রিটিশ আমেরিকা টোব্যাকো (বিএটি) কোম্পানির রাজস্ব মওকুফের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিঠি গঠন করায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে আমরা ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সেইসাথে তদন্ত কমিটি ভ্যাট আইনের ধারা ও বিধি পর্যালোচনা করে যথাযথ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং বিএটির কাছ থেকে জরিমানসহ দ্বিগুণ টাকা আদায় করার অনুরোধ করছি। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে বিএটি’র ভ্যাট ফাঁকি ও অবৈধ রেয়াত গ্রহণ বন্ধ করতে হবে। একইসঙ্গে বিড়ি শিল্প রক্ষায় বহুজাতিক কোম্পানির নিম্নস্তরের সিগারেট বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক হারিক হোসেনের সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক লুৎফর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদ আবুল হাসনাত লাভলু, প্রচার সম্পাদক শামীম ইসলাম, সহ-সম্পাদক প্রণব দেবনাথ, ও কার্যকরী সদস্য আনোয়ার হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩
ইএসএস/জেএইচ