ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ছোট ভাইকে কুপিয়ে হত্যা, পলাতক দুই ভাই ধরা ছোঁয়ার বাইরে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২৩
ছোট ভাইকে কুপিয়ে হত্যা, পলাতক দুই ভাই ধরা ছোঁয়ার বাইরে

সাভার (ঢাকা): ঢাকার ধামরাই উপজেলায় ছোট ভাই ওমর ফারুককে (৪৮) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বড় ভাই ও তার স্ত্রীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও পলাতক অপর দুই ভাই এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।

শনিবার (১৩ অক্টোবর) সকালে বাকি দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন ওমর ফারুকের স্ত্রী সিমা আক্তার।

 

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজন হলেন- ওমর ফারুকের বড় ভাই উসমান গণি (৫০) ও তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৩৫)। বাকি আসামিরা হলেন ওমর ফারুকের অপর দুই ভাই সিদ্দিকুর রহমান (৬০) ও কামরুজ্জামান (৪০)।

এর আগে বুধবার (৪ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের কাকরান এলাকা এ ঘটনা ঘটে। পরে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) নিহত ওমর ফারুকের স্ত্রী সিমা বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।  

ওমর ফারুক ধামরাইয়ের ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের কাকরান এলাকার মৃত আব্দুর রহমান কালার ছেলে। তিনি একটি কারখানার ইলেকট্রিশিয়ান ছিলেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওমর ফারুক আশুলিয়ায় একটি কারখানায় ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে কাজ করতেন। তিনি এক যুগেরও বেশি সময় সৌদি আরবে ছিলেন। সৌদি আরবে থাকাকালীন তার ভাইদের কাছে টাকা পাঠাতেন ওমর ফারুক। দেশে এসে সেই টাকার হিসাব চাইলে ভাইদের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এ ঘটনার পরও বিভিন্ন সময় ফারুকের ভাইয়েরা তাকে মারধরেরও হুমকি দেন। গত ৪ অক্টোবর শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় বাসায় ছিলেন ফারুক। তখন তার ভাই ওসমান গণি, সিদ্দিকুর রহমান ও কামরুজ্জামানের সঙ্গে পাওনা টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ওসমান গণি দা দিয়ে কুপিয়ে ফারুককে গুরুতর আহত করেন। এ সময় ওসমান গণির স্ত্রী জেসমিন তাতে সহায়তা করেন। এছাড়া বাকি দুই ভাই সিদ্দিকুর রহমান ও কামরুজ্জামান ঘটনার আগের রাতে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করতে পরামর্শ দেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফারুকরা পাঁচ ভাই। এর মধ্যে মেজো ও সেজো ভাইয়ের মধ্যে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ চলছিল। এ নিয়ে একাধিকবার সালিসও হয়েছে। তবে কোনো সুরাহা হয়নি। গত ৪ অক্টোবর (বুধবার) সকালে ফারুক গোসল করতে গেলে উসমান গণি দা দিয়ে কুপিয়ে তাকে জখম করে। পরে ফারুককে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এরপর স্থানীয়রা ফারুকের বড় ভাই উসমানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

ওমর ফারুকের স্ত্রী সিমা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, আমার স্বামীকে হত্যার আগের দিন রাতে তার ভাইয়েরা পরিকল্পনা করেন। পর দিন সকালে আমার স্বামীকে কুপিয়ে মেরে ফেলা হয়।

তিনি বলেন, আমার স্বামীকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল যাতে টাকা ফেরত দিতে না হয়। জমির ভাগ দিতে না হয়। এসব কারণে তারা কয়েক ভাই মিলে তাকে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় এখনও পরিকল্পনাকারীদের এখনও আটক করতে পারেনি পুলিশ। আমার তিনটি সন্তান নিয়ে এখন ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারছি না। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই ও বাকি দুই আসামির গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমরুল ফরহাদ বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২৩ 
এসএফ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।