কুমিল্লা: অবশেষে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক (ডিসি) খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমানের হস্তক্ষেপে ইউএনওকে নামাজের প্রথম কাতার থেকে কিছুটা সরে দাঁড়াতে বলে ইমামের চাকরি হারানোর বিষয়টির সুরাহা হয়েছে।
সেই ইমামের (ভাটরা কাছারি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম আবুল বাশার) পেছনে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায়েরও ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ডিসি।
রোববার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা ইমাম সমিতি ও শানে সাহাবা খতিব কাউন্সিলের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সুরাহা করেন জেলা প্রশাসক।
শানে সাহাবা খতিব কাউন্সিলের সদস্য শামীম মজুমদার বলেন, আমরা মনে করি, ইউএনও সাহেব ভুল করেছেন। তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে ইমাম সাহেবকে পানিতে চুবানোর হুমকি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে ইমাম-মুয়াজ্জিনের চাকরিচ্যুতির পেছনে তার হাত নেই বলে জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসক দুজনের সঙ্গে কথা বলে সুন্দর সমাধান করে দেন। ইউএনও এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ইমাম সাহেবের মনেও ইউএনও সাহেবের প্রতি আর কোনো ক্ষোভ নেই।
আরও পড়ুন: নামাজের সময় ইউএনওকে সরতে বলায় চাকরি হারালেন ইমাম
তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক ওই ইমামের পেছনে নামাজ পড়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি কুমিল্লার ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সর্বোচ্চ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অনেকটা সময় ইমামের ফোন বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোনো হুমকি থেকে ইমাম সাহেব আত্মগোপনে যাননি। ইমাম-ইউএনওর মধ্যে অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার পর নিজে থেকে চাপ অনুভব করে তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন। ইমাম ও মুয়াজ্জিন নিজ নিজ পদে বহাল রয়েছেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, এটি নিছক একটি ভুল বোঝাবুঝি ছিল। আমরা বিষয়টি সমাধান করেছি। ইউএনও ইমাম সাহেবকে চাকরিচ্যুত করেননি, এটি আমরা নিশ্চিত হয়েছি।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) জুমার খুতবা শেষে ইমাম বরাবর ঠিক পেছনে বসেছিলেন লালমাইয়ের ইউএনও। পরিচয় না জানায় ইকামত দেওয়ার আগে ইমামের ঠিক পেছন থেকে তাকে একটু সরে যেতে বলেন ইমাম-মুয়াজ্জিন। তাতে ইউএনও তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। নামাজ শেষে ইমামকে পাশের পুকুরপাড়ে ডেকে নিয়ে অনেকক্ষণ জেরা করেন এবং পানিতে চুবানোর কথা বলেন। এরপর এ ঘটনার জেরে ইমাম-মুয়াজ্জিনকে চাকরিচ্যুত করেন পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল্লাহ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২৩
এসআই