ঝালকাঠি: ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ঝালকাঠিতে ইলিশ ধরতে নেমেছেন জেলেরা। ইলিশের বংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী গত ১২ অক্টোবর থেকে ০২ নভেম্বর পর্যন্ত ছিল নিষেধাজ্ঞা।
জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞার পর বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকে নদীতে জাল ফেলছেন তারা। তাদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালি ইলিশ ধরা পড়বে এমনই আশা করছিলেন তারা। জেলেদের অধিকাংশই গুল্টিজাল ব্যবহার করে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরেন। কিন্তু এক শ্রেণীর অসাধু জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে ইলিশ শিকার করে থাকেন। এখনও জালে ডিমওয়ালা মা ইলিশ ধরা পড়ছে।
জেলে মোতালেব হওলাদার বলেন, দিনে দিনে জেলে পেশার লোক কমছে। এ পেশায় নতুন করে কেউ আর যুক্ত হন না। ঋণের বেড়াজালে আর কাঙ্ক্ষিত মাছ না পাওয়ায় এমনটা হচ্ছে। আমরা গতকাল মধ্য রাতে মাছ ধরতে নেমেছি নদীতে। বিগত দিনে তেমন মাছ ধরা পড়েনি। এখনও ঋণ দেওয়া শেষ হয়নি। এবারে পারব কি না তাও বলতে পারছি না।
এদিকে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে নদীতে মাছ ধরতে না গেলেও নিষেধাজ্ঞার পর অনেক জেলে সহযোগিতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেছেন। তাদের অভিযোগ, ২২ দিনে যে পরিমাণে চাল সহায়তা দেওয়া হয়, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। তাও আবার শুধু চাল। ভাত রান্না করে খাব কি দিয়ে। অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের যে দাম তাতে স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে।
বেশ কয়েকজনে বলেন, মা ইলিশ না ধরার জন্য সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দেয়, আমরা তা মানি। নিষেধাজ্ঞার সময় আমাদের যে পরিমাণ খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়, তা দিয়ে কিছুই হয় না। এখনকার বাজারে জিনিসপত্রের যে পরিমাণ দাম তাতে আমাদের সংসার চলে না। সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালানো অসম্ভব।
ঝালকাঠি জেলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ বলেন, জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় সরকার ২২ দিনের যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তা বাস্তবায়নে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত ছিল। জেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, মৎস্য বিভাগ মিলে অভিযান সফল করেছি। এরপরেও কিছু অসাধু জেলে মাছ ধরছে।
জেলেদের অভিযোগের বিষয়ে বলেন, মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত না এমন কিছু লোক মৌসুমি জেলে হয়ে মাছ শিকার করেছেন। যতটা সম্ভব আমরা তাদের আইনের আওতায় এনেছি।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বরাদ্দ পেলে আগামীতে আরও সহযোগিতা বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন এ মৎস্য কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০২৩
এসআরএস