ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘টার্গেট করে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়েছে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০২৩
‘টার্গেট করে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়েছে’

ঢাকা: গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে টার্গেট করে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন।

শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সচেতন নারী সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফরিদা ইয়সমিন বলেন, সংবাদকর্মীদের ওপর হামলা হবে, আর সাংবাদিকরা চুপ করে থাকবে সেটি হবে না। সাংবাদিকরা ছেড়ে দেবে না। সারাদেশে সংবাদকর্মীরা ফুঁসে উঠেছে। এ ধরনের অপতৎপরতার জবাব তারা দিতে জানে।

তিনি আরও বলেন, এখনো নানাভাবে ঘাপটি মেরে আছে স্বাধীনতার পরাজিতশক্তি। গত ২৮ অক্টোবর পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর যে হামলা হয়েছে, আমরা তার প্রতিবাদে আজকে সচেতন নারী সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে দাঁড়িয়েছি। সংবাদমাধ্যম বা গণমাধ্যম একটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলা করা এ চতুর্থ স্তম্ভকে ভেঙে দেওয়া ও গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র।

২৮ অক্টোবর সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা জানি না এ হামলা কারা ঘটিয়েছে, কে করেছে, কার মদদে ঘটেছে। সেদিন বিএনপি-জামায়েতের কর্মসূচির দিনে এ হামলা হয়েছে। তাই এর দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলকেই নিতে হবে।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, কারা এ হামলা ঘটিয়েছে তা এতদিনেও আপনারা খুঁজে বের করতে পারেননি। টেলিভিশনের ফুটেজ দেখে এ হামলাকারীদের চিহ্নিত করুন এবং শাস্তির আওতায় আনুন। কারণ সংবাদকর্মীরা কোনো দলের হয়ে কাজ করে না, জনগণের জন্য কাজ করে। সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরি করুন৷ প্রয়োজনে যত কঠোর হতে হয়, সে কঠোর ব্যবস্থা নিন।

মানববন্ধনে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, এ বিএনপি-জামায়াত আগেও সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছিল। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভেতরে ঢুকে জাতীয় প্রেসক্লাবের মর্যাদা তারা লঙ্ঘন করেছিল। বিএনপি যে সাংবাদিকবান্ধব নয়, সাংবাদিকদের সঙ্গে তাদের বৈরিতা, সেটি ২৮ অক্টোবর আবার প্রমাণ হয়ে গেছে।

বিএনপি-জামায়াতের ইতিবাচক সংবাদ বর্জনের আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, তাদের সংবাদ সম্মেলন বর্জন করতে হবে। মাঠে ঘাটে তাদের বিভিন্ন অপকর্ম তুলে ধরতে হবে। সময় এসেছে তাদের বর্জন করার৷ তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর, প্রতিহত করার, তাদের মুখোশ উন্মোচন করে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, গত ২৮ অক্টোবর যে হামলা হয়েছে, সেটি নজিরবিহীন। এরই মধ্যে সে হামলা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা চলছে। সেই বিভ্রান্তি থেকে জাতিসংঘ পর্যন্ত রক্ষা পায়নি। এটি একটি পরিকল্পিত হামলা ছিল। কিন্তু এখন বিএনপি ও এর মিত্ররা এটি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। এজন্য আমাদের এ প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে, চালিয়ে যেতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত এরা বিচারের কাঠগড়ায় না দাঁড়ায়।

তিনি আরও বলেন, আমরা তিনটি দাবি জানিয়েছি। প্রথমত, সাংবাদিকদের ওপর কারা হামলা চালিয়েছে, টেলিভিশনের ফুটেজ দেখে সেটি চিহ্নিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, সাংবাদিকদের ওপর হামলার জন্য বিএনপিকে ক্ষমা চাইতে হবে। তৃতীয়ত, যেসব সাংবাদিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, সরকারকে যেমন সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ কর্ম পরিবেশ তৈরি করতে হবে, তেমনি সংবাদমাধ্যমের অফিস থেকেও মাঠে কাজ করা সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের সুরক্ষা সরঞ্জাম দিতে হবে।

সাংবাদিক লাবণ্য ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নেতা মানষ ঘোষ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) দপ্তর সম্পাদক সেবিকা রানী, নির্বাহী পরিষদের সদস্য কামরুন নাহার, বিএফইউজের সহ-সভাপতি আফরোজা, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, শাহনাজ ও নাসিমা আক্তার সোমা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০২৩
এসসি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।