ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ক্ষুধায় কাতর মা হারা যমজ দুই বোন ফাতেমা-কুলসুম 

মোমেনুর রশিদ সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২৩
ক্ষুধায় কাতর মা হারা যমজ দুই বোন ফাতেমা-কুলসুম 

গাইবান্ধা: আড়াই মাস বয়সের যমজ দুই বোন ফাতেমা ও কুলসুম। জন্মের পর দিনই মারা গেছেন তাদের মা সাবিনা ইয়াসমিন।

এরপর থেকে প্রয়োজনীয় দুধের অভাবে ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করে আসছে শিশু দুটি। ফলে বিরতিহীন কেঁদে চলেছে একটু দুধের আশায়।  

ফাতেমা-কুলসুম গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের সুলতানপুর বাড়াইপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নান মিয়ার মেয়ে।  

পেশায় শ্রমিক মান্নান একজন ভবঘুরে যুবক। তিনি মেয়েদের কোনো খোঁজখবর রাখেন না। মা হারা শিশু দুটির ঠাঁই হয়েছে নানি মেনেকা বেগমের কোলে। নানা হায়দার আলী একজন শ্রমজীবী মানুষ।  

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদ চত্বরে নানির কোলে দেখা মেলে ক্ষুধায় কাতর কান্নারত শিশু দুটির।  

অসচ্ছল নিরুপায় নারি ও তার এক আত্মীয় অসহায় শিশু দুটিকে নিয়ে একটু সহায়তার জন্য এসেছেন নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে। তাদের হাতে একটি ফিডার থাকলেও তাতে অবশিষ্ট ছিল না একটু দুধও। তাই ক্ষুধায় কাতর কুলসুম কাঁদতে পারলেও নিস্তেজ হয়ে পড়েছে বোন ফাতেমা।

ফাতেমা-কুলসুমের নানি মেনেকা বাংলানিউজকে বলেন, গর্ভাবস্থায় মেয়ে সাবিনার শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দেয়। ফলে চিকিৎসকের পরামর্শে নির্ধারিত সময়ের এক মাস আগেই সিজারিয়ানের মাধ্যমে জন্ম নেয় জমজ দুই বোন। পর দিনই মাকে হারিয়ে এতিম হয় শিশু দুটি। এরপর থেকে দুধের অভাবে ক্ষুধার কষ্ট সহ্য করে আসছে দুই বোন। সাধ্যমতো বাজার থেকে গুঁড়া দুধের প্যাকেট কিনে তাদের ক্ষুধা নিবারণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু তা পর্যাপ্ত না হওয়ায় তাদের ক্ষুধা মিটছে না ফলে কেঁদে চলেছে তারা । তাই নিরুপায় হয়ে স্যারের কাছে এসেছেন বলে জানান তিনি।  

ফাতেমা-কুলসুমের নানা হায়দার আলী বলেন, নিজের সহায়-সম্বল বলতে কিছুই নেই। জমিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। মা হারা শিশু দুটির দুধের চাহিদা মেটাতে ভালো মানের বিদেশি দুধ খাওয়ানো প্রয়োজন। কিন্তু অর্থাভাবে একদিকে তাদের খাদ্যের চাহিদা মেটাতে পারছি না। অন্যদিকে তাদের কান্নাও সহ্য করতে পারছি না।

এ ব্যাপারে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান বলেন, শিশু দুটিকে তার নানি যেভাবে দুধ খাওয়াচ্ছেন, তাতে তাদের বাঁচানো সম্ভব হবে না। সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য রেজাউল করিমের সঙ্গে কথা হয়েছে। বুধবার তিনি স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকে শিশু দুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোসহ  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।  

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, শিশু দুটিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসহ সম্ভাব্য সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।