ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রথম নারী ফায়ার ফাইটার হওয়ার স্বপ্নপূরণ প্রিয়াঙ্কার

মিরাজ মাহবুব ইফতি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২৩
প্রথম নারী ফায়ার ফাইটার হওয়ার স্বপ্নপূরণ প্রিয়াঙ্কার ফায়ার সার্ভিসের নারী ফায়ার ফাইটাররা

ঢাকা: ফায়ার সার্ভিস যদি কখনো নারী ফায়ার ফাইটার নিয়োগ দেয়, তখন আমি আবেদন করব, এমন ইচ্ছে ছিল। স্বপ্ন ছিল ফায়ার সার্ভিসের প্রথম নারী ফায়ার ফাইটার হওয়ার।

সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। নিয়োগ পেয়ে এসব কথা বললেন ফায়ার ফাইটার প্রিয়াঙ্কা হাওলাদার। সদ্য নিয়োগ পাওয়া নারী ফায়ার ফাইটারদের একজন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স ট্রেনিং কমপ্লেক্সে ফায়ার সার্ভিসে নিয়োগ পাওয়া প্রথম ব্যাচের ১৫ নারী ফায়ার ফাইটারের নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণ শেষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রিয়াঙ্কা নিজের অনুভূতির কথা সাংবাদিকদের শোনান।  

প্রিয়াঙ্কা বলেন, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর নারী ফায়ার ফাইটার নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। অনলাইনে দেখে আবেদন করি। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল ফায়ার সার্ভিসে যোগ দেওয়ার। কিন্তু আগে নারীদের নিয়োগ হয়নি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে মেয়েদের অগ্রাধিকার আছে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসে ছিল না। নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। প্রথমবারের মতো নারী ফায়ার ফাইটার হিসেবে যোগ দিতে পারায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা যে ১৫ জন যোগ দিলাম, সবাই খুবই গর্বিত।  

প্রিয়াঙ্কা বলেন, আমরা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সর গর্বিত অগ্নিযোদ্ধা। আমরা বাংলাদেশের দুর্যোগ ও দুর্ঘটনায় উদ্ধারকাজ করব। এটি আমাদের কাছে আশীর্বাদস্বরূপ। একজন ফায়ার ফাইটার হিসেবে যোগ দিতে পেরে আমরা গর্বিত।  

মেহেরপুর জেলা থেকে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সে যোগ দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা হাওলাদার। তিনি বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী।  

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট টেকনিক্যাল কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইয়াসমিন খাতুন। তিনি বলেন, ফায়ার ফাইটারদের কাজ আমি অনেক পছন্দ করতাম এবং ভালোবাসতাম। ইচ্ছে ছিল, যদি কখনো সুযোগ পাই, তবে যোগ দেব।  

রাঙ্গামাটি ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালকের কন্যা নাজমুল নাহার দিনা। হাটহাজারী কলেজের এ শিক্ষার্থীও যোগ দিয়েছেন নারী ফায়ার ফাইটার হিসেবে। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। আমার প্রধান লক্ষ্য থাকবে সেবা করা। আমি আমার বাবাকে দেখে উৎসাহিত হয়ে এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করব। আগে কখনো সুযোগ পাইনি। যখনই আবেদনের সুযোগ পাই, সঙ্গে সঙ্গে আবেদন করি।  

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ ফায়ার ফাইটারদের (মহিলা) প্রথম ব্যাচের সঙ্গে মতবিনিময় করলেন এবং ছবি তুললেন। এটি ইতিহাসের অংশ।  

তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসে আগে অফিসার পদে শুধুমাত্র নারী ছিলেন। এই প্রথম ফায়ার ফাইটার (মহিলা) হিসেবে ১৫ জনকে নিয়োগ করেছি। ২ হাজার ৭০০'র বেশি আবেদন পড়েছিল। সেখান থেকে বাছাই করে আমরা ১৫ জনকে নিয়োগ দিয়েছি।  

তিনি আরও বলেন, ১৮ নভেম্বর নারী ফায়ার ফাইটাররা যোগ দেন। ইতোমধ্যে তিন সপ্তাহের প্রশিক্ষণ হয়েছে। একই রকম প্রশিক্ষণ হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জেন্ডার ভিত্তিক প্রশিক্ষণ হয়েছে প্রয়োজন অনুযায়ী। কিন্তু একই প্রশিক্ষণ দুই গ্রুপই করছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, বিজিবি-পুলিশ, সব সেক্টরেই নিয়োগ পেয়ে নারীরা সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। এতদিন ফায়ার সার্ভিসে নারী অগ্নিসেনা ছিল না। সব যোগ্যতায় উত্তীর্ণ ১৫ নারীকে আমরা নিয়োগ দিয়েছি, যা ফায়ার সার্ভিসের ইতিহাসে প্রথম।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২৩
এমএমআই/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।