ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কেরানীগঞ্জে আগুনে দগ্ধ নারীর মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩
কেরানীগঞ্জে আগুনে দগ্ধ নারীর মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা

ঢাকা: ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বাসায় জমে থাকা গ্যাসের আগুনে দগ্ধ হয়ে উমা রানী চক্রবর্তী (৬০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। প্রথমে ঘটনাটি দুর্ঘটনা জানানো হলেও পরে উমা রানীর ছেলে অভিযোগ করেন, তারই ছোট ভাই মাদকাসক্ত দেবা চক্রবর্তী মাদকের টাকা না পেয়ে বাসায় থাকা গ্যাস লাইনের পাইব খুলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন।

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মৃত্যু হয় উমা রানীর। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. তরিকুল ইসলাম। তিনি জানান, উমা রানীর শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।

এর আগে এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কুণ্ডা ইউনিয়নের কাউটাইল ঋষিপাড়া এলাকার একটি চারতলা বাড়ির নিচ তলায় গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে দগ্ধ হন উমা রানী (৬০), তার মেয়ে বিনা চক্রবর্তী (৪০), ছেলে দেবা চক্রবর্তী (২৮) ও নাতি পিনাক চক্রবর্তী (১৫)।

আর বিস্ফোরণে দেয়ালের ইটের আঘাতে আহত হন পথচারী ঝালমুড়ি বিক্রেতা স্বপন রাজবংশী (৫৫) ও প্রতিবেশী লিপি চক্রবর্তী (৩০)।

ঘটনার পর উমা রানীর নাতনি জ্যোতি দাস জানান, চারতলা বাড়িটি তাদের নিজেদের। নিচতলায় থাকেন উমা রানী এবং তার ছেলে ও মেয়ের পরিবার। সকালে রান্নার জন্য রান্নাঘরে যান উমা রানী। সেখানে গিয়ে দিয়াশলাই জ্বালাতেই বিকট বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়। আর বাসার দেয়ালের কিছু অংশ ভেঙে পড়ে যায়। পরে দগ্ধদের উদ্ধার করে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।

তবে রাতে মৃত উমা রানীর ছেলে সঞ্জয় চক্রবর্তী মায়ের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং অভিযোগ করেন, তার ছোট ভাই দেবা চক্রবর্তী মাদকাসক্ত। প্রায়ই টাকার জন্য পরিবারের লোকজনকে মারধর করেন তিনি। এমনকি বাবা-মা’কেও মারধর করতেন। সোমবার মাদকের টাকার জন্য বাড়ির লোকজনকে ঘরে আটকে রেখে গ্যাসের পাইব খুলে দিয়ে এরপর আগুন ধরিয়ে দেন। এতে দেবাসহ দগ্ধ হন তাদের মা, বোন ও সঞ্জয়ের ছেলে পিনাক।

এদিকে বাকি দুজনকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আহত লিপি চক্রবর্তীর ছোট ভাই সৌরভ আচার্য জানান, লিপির বাসা ওই বাড়ির পাশেই। সকালে যখন বাড়িটিতে বিস্ফোরণ হয় তখন সেখান থেকে দেয়ালের ইট এসে লিপির মাথায় লাগে।

আর স্বপন রাজবংশী পেশায় ঝালমুড়ি বিক্রেতা। থাকেন ওই এলাকাতেই। সকালে ওই বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে বাজারে যাচ্ছিলেন তিনি। তখন বিস্ফোরণে ইট এবং সাটার ভেঙে এসে তার মাথায় পড়ে।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. তরিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, দগ্ধ বিনা চক্রবর্তীর শরীরের ৮৫ শতাংশ, দেবা চক্রবর্তীর ১৬ ও পিনাক চক্রবর্তীর ২৪ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। পাশাপাশি তাদের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। তাদের সবার অবস্থায়ই আশঙ্কাজনক।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩
এজেডএস/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।