ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বড়দিনের প্রার্থনায় ফিলিস্তিনে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২৩
বড়দিনের প্রার্থনায় ফিলিস্তিনে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান

রাজশাহী: দেশের মানুষের সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা ও ফিলিস্তিনে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানানোর মধ্যে দিয়ে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) বড়দিন উদযাপন করা হচ্ছে- বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে। এদিন ফিলিস্তিনের বেথলেহেমে জন্ম দিয়েছিলেন যিশু খ্রিষ্ট অর্থাৎ হজরত ঈসা (আ.)।

বেথলেহেম পশ্চিম তীরের জেরুজালেমের দক্ষিণে একটি ফিলিস্তিনি শহর।

বড়দিন উপলক্ষে মহানগরীর অভিজাত হোটেলগুলোয় বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে। দিন শুরুর পর সকাল ৮টায় গানের সুরে সুরে সিটি চার্চে বড়দিন উপলক্ষে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।

চার্চে ‘ঊর্ধ্বলোকে ঈশ্বরের মহিমা এবং পৃথিবীতে তাহার প্রিয়পাত্র মনুষ্যদের মধ্যে শান্তি’ গানটি গাওয়া হয়। বড়দিন উপলক্ষে রাজশাহীর খ্রিস্টান সম্প্রদায় বেথলেহেমে সেই আবহ সৃষ্টি করতে তাদের বাড়িতে তৈরি করেছেন প্রতীকী গোশালা।

রাজশাহী মহানগরীর বাগানপাড়া চার্চের ফাদার বিশপ রোজারিও জানান, একই সময়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হয় দ্বিতীয় বড় উপাসনালয় বাগানপাড়ার এই চার্চেও। বড়দিনের প্রার্থনায় যুদ্ধ নয় শান্তির বার্তা পৌঁছে দিতে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সকালে রাজশাহী মহানগরীর বাগানপাড়ায় থাকা উত্তম মেষপালক ক্যাথলিক গির্জায় বড়দিনের অনুষ্ঠানে বিশপ জেলোয়াস রোজারিও বলেন, ফিলিস্তিনে যুদ্ধ, সংঘর্ষ ও মৃত্যু দ্রুত বন্ধ করুন, শান্তি ফিরিয়ে আনুন পবিত্র ভূমি জেরুজালেমে।

সকালে বড়দিনের প্রার্থনার গান দিয়ে রাজশাহীর দ্বিতীয় বৃহৎ এই গির্জায় শুরু হয় পুরো দিনের আনুষ্ঠানিকতা। প্রার্থনায় নিজ নিজ ধর্মের মূল দীক্ষায় অবস্থান করে বিশ্বশান্তি কামনা করা হয়। এরপর গান নাচে মেতে উঠে এ ধর্মের সাধারণ মানুষ।

বড়দিনের সম্ভাষণ বক্তব্যে বিশপ রোজারিও বার বার শান্তি কামনায় সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন। এই গির্জায় শুভ বড়দিনের গান ও তবারক দিয়ে শেষ হয় আনুষ্ঠানিকতা।

রাজশাহীতে বড়দিনের অনুষ্ঠান ক্যাথলিক গির্জা, উত্তম মেষপালক গির্জা ছাড়াও নগরের কাজিহাটা গির্জা ও অন্যান্য গির্জাতেও যথাযথভাবে পালিত হচ্ছে। রাত ৯টায় কীর্তন গান প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়েছে চার্চে।

এছাড়া সিটি চার্চ ও ডিঙ্গাডোবা চার্চসহ রাজশাহীর ২১টি ধর্মপল্লীর গির্জায় গির্জায় রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাত থেকেই শুরু হয় বিশেষ প্রার্থনা। সোমবার সকালে ডিঙ্গাডোবা চার্চসহ মহানগরীর অন্যান্য উপাসনালয়ে যিশু খ্রিস্টকে স্মরণ করে প্রার্থনা করা হয়।

গত দুই বছরের তুলনায় এবার বড়দিনের আয়োজনে চাকচিক্য কিছুটা বেশি। দিনটি উপলক্ষে খ্রিস্টান পরিবারগুলোয় কেকসহ রয়েছে বিশেষ খাবারের আয়োজন।

কীর্তনের পাশাপাশি স্বল্প পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে ধর্মীয় গানের আসর। প্রার্থনায় সকল প্রকার রোগমুক্তির পাশাপাশি বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বের মানুষের সুখ-সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করা হয়।

রাজশাহীর গির্জা ও হোটেলেগুলো বড়দিনের ঐতিহ্যবাহী জাঁকজমকপূর্ণ সাজ-সজ্জায় সেজেছে। গোশালা স্থাপন, রঙিন কাগজ, ফুল ও আলোর বিন্দু দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন করে।

গির্জা ও অভিজাত হোটেলগুলোয় টুকটুকে লাল পোশাক পরা সফেদ দাড়ি-গোঁফের বুড়ো সান্তা ক্লজ উপহারের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ছোট্ট সোনামণিদের হাতে তুলে দিচ্ছেন দারুণ সব উপহার।

রাজশাহীর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) জামিরুল ইসলাম জানান, দিনটি উদযাপনের লক্ষ্যে চার্চগুলোয় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বড়দিন উদযাপনের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যেই ধর্মীয় রীতিতে আনন্দঘন পরিবেশে সবাই বড়দিন উদযাপন করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২৩
এসএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।