ঢাকা: ব্রাসিলিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
‘প্রবাসীর কল্যাণ মর্যাদা আমাদের অঙ্গীকার, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় তারাও সমান অংশীদার’ স্লোগানকে উপজীব্য করে স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপন করছে সরকার।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) ব্রাসিলিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, বিজয় দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সৌজন্যে একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সব শহিদ সদস্যরা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ বুদ্ধিজীবী ও ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। জাতীয় প্রবাসী দিবস ২০২৩ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন দূতালয় প্রধান ফুয়াদ হাসান পরাগ।
দিবসটি উপলক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পাঠানো একটি বিশেষ ভিডিওচিত্র প্রদর্শিত হয়।
রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা তার বক্তব্যে স্বাধীনতার স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি ৩০ লাখ শহিদ, দুই লাখেরও বেশি নির্যাতিত মা-বোনদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করেন।
রাষ্ট্রদূত ফয়জুননেসা দেশ গঠনে প্রবাসীদের অসামান্য অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে ৩০ ডিসেম্বরকে জাতীয় প্রবাসী দিবস হিসেবে ঘোষণা করায় সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান এবং ১৭০টি দেশে বসবাসরত প্রায় ১.৫ কোটি প্রবাসীদের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
রাষ্ট্রদূত ভূমি ব্যবস্থাপনার ডিজিটালাইজেশন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম, দ্বৈত নাগরিকত্ব ইত্যাদি ছাড়াও সব প্রকার ডিজিটালাইজড কন্স্যুলার সেবা সম্পর্কে ধারণা দেন এবং এ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রবাসীদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়। রাষ্ট্রদূত এ সময় প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বার্থ সংরক্ষণে সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগ বিশেষ করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেন।
দক্ষিণ আমেরিকাতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আরও অধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত উপস্থিত প্রবাসীদের তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন এবং ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, পর্তুগিজ ও স্প্যানিশ ভাষা শিক্ষালাভের মাধ্যমে দক্ষিণ আমেরিকাতে কর্মসংস্থানের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত ফয়জুননেসা তার বক্তব্যে প্রবাসে বসবাসরত সব প্রবাসী বাংলাদেশি অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের আত্মপ্রত্যয়ী হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বিশ্বায়নের এ যুগে আজকের বর্তমান প্রজন্মের সন্তানরা শুধু নিজ দেশের নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের ভবিষ্যৎ কর্ণধার, তাই তাদের জ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার দায়িত্ব সবার।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০৪১ অর্জনে আজকের প্রজন্মকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদূত অভিভাবকদের বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।
আমন্ত্রিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে সমবেতভাবে জাতীয় সংগীত গাওয়ার মাধ্যমে দূতাবাসের আয়োজন সমাপ্ত হয়। দূতাবাস আয়োজিত এ অনুষ্ঠানটি প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি করে।
অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশি ভাই-বোনদের নৈশ ভোজের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩
টিআর/আরআইএস