ঢাকা: নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হলেও বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর দপ্তর পরিবর্তন হয়নি। আসাদুজ্জামান খান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েই রয়েছেন।
শপথের পর বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) রাতে নতুন নিয়োগ পাওয়া মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
আসাদুজ্জামান খান ১৯৫০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা জেলার তেজগাঁও থানার মণিপুরিপাড়ায় সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে তেজগাঁও পলিটেকনিক হাইস্কুল থেকে এসএসসি ও ১৯৬৭ সনে জগন্নাথ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি অনার্স সম্পন্ন করেন। ছাত্রজীবনে তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি সত্তরের দশকে মঞ্চ নাটক করতেন এবং তুখোড় ব্যাডমিন্টন ও দাবা খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি ছাত্র জীবন থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতি শুরু করেন।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে আসাদুজ্জামান খান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ২ নম্বর সেক্টরের ক্যাপ্টেন আব্দুল হালিম চৌধুরীর অধীনে মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেন। তিনি বর্তমানে ঢাকা মহানগর (উত্তর) আওয়ামী-লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
আসাদুজ্জামান খান ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জানুয়ারি ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হয়ে ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। তার দক্ষতা, যোগ্যতা এবং দেশ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং যথারীতি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের মাধ্যমে তিনি বর্তমানে বৈশ্বিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও রাজনীতিবিদ হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃত।
মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযানের মাধ্যমে দেশে মাদকের প্রকোপ কমিয়ে আনতে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছেন আসাদুজ্জামান খান। তিনি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান ও জাতিসংঘে টেকসই শান্তি সম্মেলনসহ বহু আন্তর্জাতিক সেমিনারে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন। বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় তিনি অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। তার নেতৃত্ব ও দিক নির্দেশনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অধিভুক্ত ১০ টি প্রতিষ্ঠান সত্যিকার অর্থে বিশ্বমানের নিরাপত্তা ও সেবা দানে প্রাগ্রসর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগের স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। প্রাইভেটাইজেশন বোর্ড এবং প্রেস কাউন্সিলেরও একজন সম্মানিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দোহার পদ্মা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, হোসেন আলী স্কুলের সভাপতি, তেজগাঁও কলেজের প্রেসিডেন্ট এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনেট সদস্য।
তিনি তেজগাঁও, রমনা, হাতিরঝিল ও দোহার এলাকায় স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদরাসা ও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। রাজনীতির পাশাপাশি একজন সমাজকর্মী হিসেবে তিনি সুপরিচিত।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৪
এমআইএইচ/আরএইচ