ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

জেঁকে বসেছে শীত, বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৪
জেঁকে বসেছে শীত, বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ

মাদারীপুর: দ্বিতীয় দিনের মতো দেখা নেই সূর্যের। শীত বেড়েছে আরও।

সূর্যের দেখা না পাওয়া আর উত্তরের বাতাসে বাড়াচ্ছে শীতের প্রকোপ। দুর্ভোগ বেড়েছে মাদারীপুরের জনজীবনে। শীতের তীব্রতায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার চরাঞ্চলের মানুষের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে রয়েছে স্থানীয়রা। একই সঙ্গে বেড়েছে শীতজনিত রোগও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদ বেষ্টিত মাদারীপুর জেলার শিবচরের ১৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ উপজেলা। উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী ইউনিয়ন ৪টি। বন্দরখোলা, মাদবরেরচর, কাঁঠালবাড়ী এবং চরজানাজাত এলাকার চরে বসবাসরত মানুষ তীব্র শীতে পড়েছে বিপাকে। এসব এলাকার কৃষক ও জেলেরা তীব্র শীতে স্বাভাবিক কাজ কর্ম করতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। গবাদি পশু নিয়েও রয়েছেন বিপাকে। বৃদ্ধ ও শিশুদের বেড়েছে শীতজনিত রোগের প্রকোপ। এছাড়া জেলার কালকিনি উপজেলার চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

আলাপকালে একাধিক ভ্যান চালক জানান, শীতের তীব্রতায় ভ্যান চালানো যেমন কষ্টকর হয়ে উঠেছে, তেমনি সাধারণ যাত্রীরাও শীতের কারণে ভ্যানে উঠতে চান না। শুক্রবার থেকে সূর্য উঠে নাই। তীব্র শীতে দুর্ভোগ বেড়েছে। কমেছে আয়-রোজগারও।

শিবচরের কাঁঠালবাড়ী এলাকার ভ্যানচালক ইদ্রিস নামে এক ব্যক্তি জানান, দুইদিন ধরে প্রচণ্ড শীত পড়েছে। ঠিকমতো কাজকর্ম করা যাচ্ছে না। এরকম কয়েকদিন চলতে থাকলে আয়-রোজগারও কমে যাবে।

উপজেলার চর এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, নদীর পাড়ে বাতাস বেশি থাকায় শীতও বেশি। ফসলের ক্ষেতে কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে। গরু-ছাগল নিয়ে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে চর এলাকায়। অনেকে শীতবস্ত্রের অভাবেও রয়েছে।

উপজেলার উৎরাইল বাজারের দোকানি মো. রাজন বলেন, দুদিন ধরে শীত বেড়েছে। সকাল ও দুপুরের পর শীত আরও বাড়ে। বাজারে লোকজন কম আসে। বেচাকেনাও কম!

এদিকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, শীতে হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশুরা ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। প্রতিদিনই শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে ভিড় করছেন স্বজনরা।

শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত সেবিকা পরশমনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ১৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে ১০ জনে ডায়রিয়া। বাকি আটজনের ঠাণ্ডাজনিত রোগ। এছাড়া সকাল থেকে আউটডোরে ঠাণ্ডাজনিত অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।

এদিকে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকারিভাবে দুই দফায় কমপক্ষে চার হাজার শীতবস্ত্রের বরাদ্দ হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া চলতি মাসে আরও বরাদ্দ হবে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।

এছাড়া শীতে বেসরকারিভাবে, ব্যক্তি উদ্যোগেও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, সরকারিভাবে দুই দফায় চার হাজারের মতো শীতবস্ত্র এসেছে। এ মাসে আরও শীতবস্ত্র আসবে। এগুলো যথাযথভাবে বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৪
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।