ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফেনীতে নারীদের হোমমেড কেকের বাজার মাসে ৪০ লাখের বেশি 

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৪
ফেনীতে নারীদের হোমমেড কেকের বাজার মাসে ৪০ লাখের বেশি 

ফেনী: বর্তমান সময়ে বিয়ে, জন্মদিন, ঈদ, পূজা, পার্বণ, বড়দিন কিংবা যেকোনো উৎসবে কেক হচ্ছে অন্যতম অনুষঙ্গ। কেক কাটা ছাড়া যেন উৎসব অপূর্ণ থেকে যায়।

এর ফলে কেকে এসেছে নানা রকম বৈচিত্র্য।

দোকানের গতানুগতিক কেক থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছেন ব্যক্তি উদ্যোক্তাদের তৈরি কাস্টমাইজ কেকের প্রতি। ফেনীতে ঘরে তৈরি এসব কেকের বাজার মাসে ৪০ লাখ টাকারও বেশি। আর এর সঙ্গে যুক্ত আছেন দুই শতাধিক নারী উদ্যোক্তা।

ফেনী সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনায় স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাতিমা পারহীন দিয়া। শখের বসেই কেক বানানো শুরু তারা। ভালো লাগার কাজটি এখন পরিণত হয়েছে পরিবারের উপার্জনের অন্যতম অনুষঙ্গ। প্রতি মাসে কেক তৈরি করেই এই কলেজ শিক্ষার্থী আয় করছেন ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। মাস শেষে পরিবারের জন্য দিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা।

ফাতিমা বলেন, শখের বসে কাজটা শুরু করেছিলাম। এখন এটির মাধ্যমেই পরিবারকে সাপোর্ট দিচ্ছি। এটি অনেক বড় বিষয়।

গৃহিণী ফৌজিয়া হক চৌধুরী। বিয়ের পর কেক তৈরির হাতেখড়ি হচ্ছেন তার শাশুড়ি। করোনার সময়টায় যখন চারপাশটা থমকে ছিল, স্বামী-শ্বাশুড়ি ও দেবরের সহায়তায় তখন মাসে দুই শতাধিক কেক তৈরি করে লাখ টাকা বিক্রি করছেন তিনি। কেকের গুণগত মানের কারণে নামটি ছড়িয়ে পড়েছিল জেলার সর্বত্র।

ফৌজিয়া বলেন, শুরুটা করোনার সময়। সে সময় মাসে ৭০০ থেকে ৮০০ কেক তৈরি করেছি। প্রচুর সাড়া পেয়েছিলাম। এখনও ব্যস্ততা আছে।

শুধু এই দুই নারীই নয়, ফেনীতে কেক তৈরি করে আর্থিকভাবে সুফল পাচ্ছেন এমন নারীর সংখ্যায় দুই শতাধিক। তাদের এই পথচলায় সারথি হয়ে আছেন পরিবারের বাকি সদস্যরাও।  

প্রশিক্ষণ, সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেলে কেক তৈরির এ ঘরোয়া শিল্প ব্যাপক সম্ভাবনার হয়ে উঠবে বলে মনে করছে নারী উদ্যোক্তারা।

কেকের গুণগত মান ও অলংকরণের কারণে ভোক্তারা দোকানের কেকের চাইতে নারী উদ্যোক্তাদের ঘরে তৈরি কেকের প্রতি আগ্রহ বেশি দেখাচ্ছেন।

বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে অনলাইনে যে-সব অর্ডার আসছে, তার মধ্যে কেকের অর্ডারের অধিকাংশই ঘরে তৈরি কেকের। মানুষ নিজের ইচ্ছে মতো ডিজাইনে তৈরি করে নিতে পারেন বলে এসব কেকের চাহিদাই বেশি।

বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ইজি লাইফের স্বত্বাধিকারী শহিদুল আলম মিশু বলেন, অনলাইনে সাধারণত যে কেকের অর্ডার আসে, তার অধিকাংশ ঘরে তৈরি কেক। মানে ভালো ও সুন্দর ডিজাইন হওয়ায় মানুষের আগ্রহ বেশি থাকে।

ফেনী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আইনুল কবির শামীম বলেন, ঘরে নারীরা নীরবেই একটি বিপ্লব করেছেন। ঘরে তৈরি খাবারের একটি বড় বাজার গড়ে উঠেছে। কেকের বাজারের বড় অংশ নারীদের দখলে। এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। বিসিককে সঙ্গে নিয়ে চেম্বার নারী উদ্যোক্তাদের এসব সহায়তা করবে।

নারীদের তৈরি করা এসব কেক পাউন্ড প্রতি ৪০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। দোকানের কেকের চাইতে দামে কিছুটা বেশি হলেও গুণগত মানের কারণে ভোক্তারা এসব কেকেই বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২৪
এসএইচডি/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।