নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে খাগকান্দা ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ১৬ বাড়ি লুটপাটের ঘটনার রেশ ধরে মামলার বাদী আবুল হোসেনকে (৪২) কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। এ ঘটনায় হাতেম আলী (৬০) নামে একজন নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ বলছে লোকটি স্ট্রোক করে মারা গেছে। হাতেম আলীর পরিবার দাবি করে হাতেম আলীকে মেরে ফেলে হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আবুল হোসেন নামে একজনকে পিটিয়ে আহত করার পর এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর একপর্যায়ে এ ঘটনায় নিহত হাতেম আলীর পক্ষের লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে মরদেহ আনতে বাধা দেয়। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। পরে পুলিশ পিছু হাটতে বাধ্য হয়। এদিকে হাতেম আলীর লোকজন নিজেরাই হাতেম আলীর মরদেহ ঢাকা মেডেকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশতিয়াক আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহ জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা তোফাজ্জল হোসেন এবং ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য জুলহাস মেম্বার ও শাহ আলমের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। গত সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে জুলহাস মেম্বারও শাহ আলমের পক্ষের লোকজন তোফাজ্জল ও মহিলা ইউপি সদস্য আফরোজার বাড়িসহ ১৬ বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। এ নিয়ে তোফাজ্জলের ভাই আবুল হোসেন বাদী হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি থানায় একটি মামলা করেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তোফাজ্জলের ভাই আবুল হোসেন (৪২) বাহেরচর বাজারে তার দোকান ঘর খুলতে গেলে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে জুলহাস মেম্বারের লোকেরা। তাকে সঙ্গে সঙ্গে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্রে এনে ভর্তি করা হলে এলাকায় এ নিয়ে আবারও উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এলাকায় পুলিশ যাওয়ার সংবাদে জুলহাস মেম্বারের পক্ষের লোকজন এদিক ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। এ সময় জমিতে কাজ করতে থাকা হাতেম আলী আতঙ্কিত হয়ে মারা যায়।
আড়াইহাজার থানার ওসি মোহাম্মদ আহসানউল্লাহ আরও জানান, হাতেম আলীর মৃত্যু স্ট্রোকজনিত কারণে হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ার জন্য মরদেহের ময়নাতদন্তের দরকার। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত শান্ত রয়েছে। আমিসহ পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছি। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে হাতেম আলীর স্ট্রোকজনিত না কি হত্যা।
হাতেম আলীর ঘটনায় হত্যা মামলা হবে কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, ঊর্ধ্বতন মহলের সঙ্গে আলাপ করে সিন্ধান্ত নেব। আগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
জুলহাস মেম্বারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, হাতেম আলীকে হত্যা করা হয়েছে।
তোফাজ্জল হোসেন জানান, হাতেম আলী স্ট্রোক করে মারা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪
এমআরপি/জেএইচ