ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আ.লীগের বাবুল হত্যায় মেয়র আক্কাসের সম্পৃক্ততা তদন্তে এলজিডি 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০২৪
আ.লীগের বাবুল হত্যায় মেয়র আক্কাসের সম্পৃক্ততা তদন্তে এলজিডি 

রাজশাহী: রাজশাহীর বাঘায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল (৫০) নিহত হওয়ার ঘটনায় পৌর মেয়র আক্কাস আলীর সম্পৃক্ততা আছে কি না তা তদন্ত করছে স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিডি)। ২৭ জুন স্থানীয় সরকারের পৌর-১ শাখার উপসচিব আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি চিঠির খবর মঙ্গলবার (২ জুলাই) গণমাধ্যমে আসে।

ওই চিঠিতে রাজশাহীর জেলা প্রশাসককে (ডিসি) সরেজমিন তদন্ত করে মতামতসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

গত ২২ জুন সংঘর্ষের পর একটি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ‘বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাস আলী আওয়ামী লীগ নেতা বাবুলকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন। ’ মূলত ওই সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টির তদন্ত শুরু করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তবে এই চিঠি ইস্যুর আগের দিন ২৬ জুনই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল।  

পরদিন জানাজার নামাজে বাবুলের মরদেহ সামনে রেখে রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের এমপি শাহরিয়ার আলম বক্তব্য দেন। তিনি এসময় বলেন, ‘খুনি আক্কাস (পৌর মেয়র), খুনি মেরাজ (পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম) এবং তাদের পেছনে থেকে মদদদাতা হিসেবে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন (আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটির মেয়র) এবং আসাদুজ্জামান আসাদের (রাজশাহী-৩ আসনের এমপি) নামে মামলা করা হবে। ’

দলের সিনিয়র নেতাদের জড়িয়ে স্থানীয় এমপি শাহরিয়ার আলমের এমন বক্তব্যের পর রাজশাহীর রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বাদ দিয়ে আলোচনার মোড় ঘুরে যায় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের দিকে। তবে নিহত বাবুলের পরিবার স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তারা লাশ নিয়ে রাজনীতি চান না। এই দলাদলিতে বাবুলের প্রকৃত খুনিরা আড়ালে চলে যেতে পারে বলেও তাদের আশঙ্কা।

আশরাফুল ইসলাম বাবুলের স্ত্রী জরিনা বেগম বেবী বলেন, ‘লিটন ভাই (প্রেসিডিয়াম সদস্য) ও আসাদ ভাইয়ের (এমপি) সঙ্গে তার স্বামীর কোনো ধরনের কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। এক সময় তার স্বামী তাদের সঙ্গেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। সবার সঙ্গেই তাদের ভালো সম্পর্ক ছিল। এই নেতাদের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ ছিল না। তারা লাশ নিয়ে রাজনীতি চান না; প্রকৃত খুনির বিচার চান। ’

রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ জানান, পৌর মেয়র আক্কাস আলী ঘটনার দিন বাবুলকে কুপিয়েছিলেন কি না, তা তদন্ত করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ তাকে চিঠি দিয়েছে। তিনি এটি তার কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডি) আশরাফুল ইসলামকে দিয়েছেন। এখন তিনি বিষয়টি তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দিলে তিনি ঢাকায় পাঠাবেন।

২২ জুন রাজশাহীর বাঘা উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত হন বাবুল। এরপর ২৬ জুন বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আধিপত্য বিস্তার ও বাঘা উপজেলা দলিল লেখক সমিতির বাড়তি টাকা আদায়কে সমর্থন দেওয়া বা না দেওয়া নিয়ে ওই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটেছিল। এই ঘটনায় থানা ও আদালতে পাল্টাপাল্টি দুইটি মামলা হয়েছে।

আরও পড়ুন
বাঘায় আ.লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ-ককটেল বিস্ফোরণ, টিয়ার শেল ছুড়ে নিয়ন্ত্রণ

দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত আ. লীগ নেতা বাবুলের মৃত্যু

জানাজার মাঠে শাহরিয়ারের হুঁশিয়ারি, প্রতিক্রিয়া দেখালেন লিটন

আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় এবার আদালতে মামলা

শাহরিয়ার আলমের কুশপুতুল পোড়াল যুবলীগ-ছাত্রলীগ, অবাঞ্ছিত ঘোষণা

এমপি শাহরিয়ারকে আ.লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের

শাহরিয়ার আলমকে ‘ষড়যন্ত্রকারী’ আখ্যা দিল রাজশাহী মহানগর আ.লীগ

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২৪
এসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।