ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সব সমাজের মানুষই বৈষম্য পছন্দ করে না: জি এম কাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪১ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২৪
সব সমাজের মানুষই বৈষম্য পছন্দ করে না: জি এম কাদের

ঢাকা: জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, কোটাবিরোধী আন্দোলন অত্যন্ত যৌক্তিক আন্দোলন। সব সমাজের মানুষই বৈষম্য পছন্দ করে না।

বৈষম্যময় সমাজকে সুষ্ঠু সমাজ বলা যায় না। বাঙালিরা বৃটিশ আমল থেকে বৈষম্যের শিকার হয়েছিল। বৈষম্য থেকে বাঁচতেই তারা পাকিস্তান আন্দোলনের সাথে জড়িত হয়েছিল। পরবর্তীতে পাকিস্তানিরাও বাঙালিদের সঙ্গে বৈষ্যম্য সৃষ্টি করেছিল। তাই প্রথমে শুরু হলো স্বাধীকার আন্দোলন এবং পবরবর্তীতে স্বাধীনতা সংগ্রাম। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র অর্জন করেছিলাম, শুধু বৈষম্য থেকেই বাঁচতে।

রোববার (৭ জুলাই) দুপুরে বনানী কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে জাপার চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।  

জাপার চেয়ারম্যান বলেন, স্বপ্ন ছিল আমাদের একটি দেশ হবে, আমাদের দেশ হবে বৈষম্যহীন। যেখানে নির্যাতন-নিপীড়ন থাকবে না। সংবিধানে বৈষম্যের বিরুদ্ধে জোর দিয়ে বলা হয়েছে। চাকরিতে কোটা পদ্ধতি হচ্ছে সংবিধান পরিপন্থি।

তিনি বলেন, বৈষম্য সৃষ্টি করতেই বাংলাকে পাকিস্তানিরা রাষ্ট্রভাষা করতে চায়নি। ভাষার মাধ্যমে বৈষম্য সৃষ্টি করতে চেয়েছিল তারা। উদ্দেশ্য ছিল বাঙালিরা যেন সবদিক থেকে পিছিয়ে থাকে। এই বৈষম্যের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধেই আমাদের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে ৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রাণ দিয়ে ছিলেন আমাদের ভাইয়েরা। বৈষম্যহীন এবং ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গড়তেই আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছিল। এমন অবস্থায় চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সাংঘর্ষিক অবস্থা সৃষ্টি করে। সংবিধানে সাম্যের কারণে কিছু মানুষকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সুযোগ দেওয়ার কথা আছে। যারা পিছিয়ে আছে, তারা যেন এগিয়ে যেতে পারে। পিছিয়ে পড়াদের কতটুকু সহায়তা দেওয়া হবে তাও সংবিধানে বলা আছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান বা তাদের উত্তরাধিকারদের কোটা পদ্ধতিতে সুযোগ দেওয়া সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। প্রথমে মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা করা হয়েছিল, এখন তা ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি করা হয়েছে। এটা নিয়ে বহু কন্ট্রোভার্সি আছে। মুক্তিযুদ্ধকালীন করো বয়স ছিল ২ থেকে ৩ বছর আবার কারো জন্মই হয়নি তারাও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। অনেকের মুক্তিযুদ্ধের অবদান নিয়ে সন্দেহ আছে। আবার অনেকেই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন কিন্তু তারা বিভিন্ন কারণে তালিকাভুক্ত হতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধে অনেকেই জীবন দিয়েছেন, তাদের সন্তানরাও জীবন দিয়েছেন কিন্তু শিক্ষা ও রাজনৈতিক সচেতনতার কারণে তারা তালিকাভুক্ত হতে পারেনি।  

তিনি আরও বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এককালীন সুবিধা দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু তা অন্য কাউকে বঞ্চিত করে বা বৈষম্যের শিকার করে নয়। যেখানে একজন চাকরি পাওয়ার জন্য উপযুক্ত তাকে বঞ্চিত করে অন্য কাউকে চাকরি দেওয়াটা স্বাধীনতাযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি। কোটা পদ্ধতির মাধ্যমে কারো অধিকার বঞ্চিত করা অন্যায়। যে পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে তাকে বঞ্চিত করার অধিকার কারো নেই। যে বঞ্চিত হবে তার মা-বাবাও বঞ্চিত হলো। তাদের উত্তরাধিকারও বঞ্চিত হবে এই পদ্ধতিতে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২৪
এসএমএকে/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।