ঢাকা, শুক্রবার, ১ ভাদ্র ১৪৩১, ১৬ আগস্ট ২০২৪, ১০ সফর ১৪৪৬

জাতীয়

পলিথিনে মুড়ানো ঘরে অসহায় বৃদ্ধার বসবাস

আব্দুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৪
পলিথিনে মুড়ানো ঘরে অসহায় বৃদ্ধার বসবাস

নেত্রকোনা: নেত্রকোনা থেকে নাজিরপুর যাওয়ার পথে একটু অদূরেই আনন্দপুর এলাকায় পলিথিনে মুড়ানো ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করে ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা আছিয়া খাতুন।

বৃদ্ধা আছিয়া খাতুনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, স্বামীকে নিয়ে এই ঘরেই বসবাস করতেন তিনি।

স্বামীর মৃত্যুর পর, স্বামীর রেখে যাওয়া শেষ স্মৃতি নিয়েই বেছে আছেন এই বৃদ্ধা। এক সময় স্বামীকে নিয়ে সুখের সংসার ছিল আছিয়া খাতুনের। বেশ কিছু দিন আগে স্বামী আর সাত সন্তানের মৃত্যুর পর এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে তিনি। এখন বার্ধক্যের কারণে তিনি নিজের কাজ করতে পারেন না, সংসার চলে মানুষের দান দক্ষিণায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, পলিথিনে মুড়ানো ঝুপড়ি ঘরে মাটির বিছানায় শুয়ে আছেন। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এই বৃদ্ধা ঠিকমতো স্পষ্ট করে কথাও বলতে পারেন না। ঘরের এক পাশে মাটি দিয়ে উঁচু করে তৈরি করেছেন মাটির বিছানা। সেখানেই পার করছেন বছরের পর বছর। মানুষের দান সদগায় চলে বৃদ্ধা আছিয়ার সংসার।  

স্থানীয়রা জানায়, নয় সন্তানের জননী আছিয়া খাতুন। এর মধ্যে সাতজন ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে কেউ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন কেউবা আবার অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন। এক মেয়েকে দিয়েছেন বিয়ে। আরও এক ছেলে পাগল হয়ে বহু বছর ধরে ভবঘুরে। সবকিছু হারিয়ে আছিয়া খাতুন এখন দিশেহারা।

অসহায় বৃদ্ধা আছিয়া খাতুন বলেন, আমার আর কিছু নেই, স্বামী সন্তান সব গেছে। এখন শুধুই হাহাকার। সরকার যদি আমাকে কিছু দিতো হয়ত শেষ জীবনটা আমার না খেয়ে ঝুপড়ি ঘরে কাটাতে হবে না।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, আছিয়া খাতুন দীর্ঘদিন ধরেই কষ্টে আছেন। সরকারি সহযোগিতা পেলে কিছু স্বস্তি পাবে। ঝুপড়ি ঘরে ময়লা আবর্জনার সঙ্গে দিন কাটছে তার। আমরা মাঝেমধ্যে সামান্য সহযোগিতা করি কিন্তু তা দিয়ে কিছুই হয় না। সরকারিভাবে বড় বরাদ্দ দিলে হয়ত তার শেষ জীবনটা ভালো কাটতে পারে।

এ বিষয়ে কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান বলেন, বৃদ্ধার খোঁজ নিয়ে সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া পরবর্তীতে তাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঘর দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।