ঢাকা, বুধবার, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩১, ১৪ আগস্ট ২০২৪, ০৮ সফর ১৪৪৬

জাতীয়

রাজশাহী শহরে পরিচ্ছন্নতা ও সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন শিক্ষার্থীরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০২৪
রাজশাহী শহরে পরিচ্ছন্নতা ও সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী: টানা সামাজিক অস্থিরতা ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্যেই রাজশাহী শহরে পরিচ্ছন্নতা ও সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রাষ্ট্র ও দেশ সংস্কারের এমন সব কার্যক্রমে মধ্য দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত গড়ে তুলছেন এসব শিক্ষার্থীরা।

নতুন বাংলাদেশ বির্নিমাণের প্রত্যয় নিয়ে দেশব্যাপী পরিষ্কার-পরিছন্ন ও যানজট নিরসনে রাজপথে নেমে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। গেল দুইদিন থেকে তারই ধারাবাহিকতায় রাজশাহীর প্রধান সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছেন তারা। একইসঙ্গে বিভিন্ন স্থানের ময়লা আবর্জনা ও ঘটে যাওয়া সহিংসতার ধ্বংসাস্তুপ এবং জঞ্জাল সরাচ্ছেন। শহরজুড়ে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা এই কাজগুলো করছেন।

বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরীর বাস টার্মিনাল, আলুপট্টি মোড়, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, মনিচত্বর, লক্ষ্মীপুর, রেলগেট, বর্ণালি মোড়সহ এলাকায় যানজট নিরসনে দায়িত্ব পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ শিক্ষার্থী, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের রোভার স্কাউট সদস্য, বয় স্কাউট, গার্লস গাইড, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এবং রেড ক্রিসেন্ট সদস্যদেরকেও এসব কাজে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যাচ্ছে।

দেশজুড়ে চলমান সংকটময় মুহূর্তে যখন বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যরা কর্মবিরতিতে আছেন সেই মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের এই ভূমিকায় খুশি সাধারণ মানুষ ও পথচারীরা। সড়কে যানবাহনে চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরানোর পাশাপাশি ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ কিংবা রাত জেগে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পাহারার কাজে মুগ্ধ সবাই। নতুন প্রজন্মের হাত ধরেই নতুন করে দেশ উঠুক এটিই চান তারা।

রাজশাহীর সাহেব বাজারে আসা পঞ্চাশোর্ধ পথচারী শাহ আলম বলেন, এমন সব দৃশ্য তাদের কাছে একাবারেই নতুন। তরুণ প্রজন্মকে সবাই মোবাইল আসক্ত, আর অলস হিসেবেই জানে। কিন্তু এই প্রজন্ম বিভিন্ন কার্যক্রম দিয়ে তাদের নতুন করে সবার কাছে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। নিজের জীবন দানের বিনিময়ে দেশকে দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন করেছে। একটা দেশকে নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছে। এই প্রজন্মই দেশকে সুন্দরভাবে সাজাবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাজারে আসা গৃহিনী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, কয়েক দিন পর বাজারে আসলাম। শিক্ষার্থীরা রাস্তাঘাট পরিষ্কার করছে। তারা হাতে ছোট লাঠি আর বাঁশি বাজিয়ে ট্রাফিক দেখাশোনা করছে এটা প্রশংসনীয়। মনে হচ্ছে আসল ট্রাফিক সদস্যরাই দায়িত্ব পালন করছে। তাদের ধন্যবাদও জানান তিনি।

সড়কে দাঁড়িয়ে হাতে হ্যান্ড মাইক নিয়ে পথচারীদের সচেতন করা মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রাহক ও সাংবাদিক ওয়ালিউর রহমান বাবু বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিজয় এসেছে। এই বিজয় আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে পথ প্রদর্শক। যেহেতু রাস্তায় কোনো ট্রাফিক নেই, সে কারণে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে সে কারণে ছাত্রদের সাথে রাস্তায় নেমেছেন। সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০২৪
এসএস/এএটি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।