ঢাকা: শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটি একদিন বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। এজন্য মঙ্গলবারই (৮ অক্টোবর) প্রজ্ঞাপন জারি করে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ছুটি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের মাহফুজ আলম এ কথা জানান।
তিনি বলেন, অনেকদিন ধরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দাবি ছিল দুর্গাপূজার ছুটি বাড়ানোর জন্য। ওনারা ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত আনন্দ উদযাপন করেন। এবার দুর্গাপূজার দশমীর আগে শুক্র-শনিবার পড়েছে। তাই আমরা চিন্তা করেছি এবার আমরা একদিন ছুটি বাড়িয়ে দেবো। যাতে ওনারা একটা বড় সময় পান পূজা উদযাপনের জন্য। সরকার বৃহস্পতিবার ছুটি ঘোষণা করে আজকের মধ্যে একটি প্রজ্ঞাপন হয়তো জারি করবে। এর মধ্যে দিয়ে পূজার ছুটি একদিন বাড়ানো হবে।
তিনি আরো বলেন, গত দুই মাসে হিন্দু সম্প্রদায় যেসব দাবি নিয়ে আমাদের কাছে এসেছেন, ওই দাবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে আমরা চেষ্টা করেছি কি ধরনের পদক্ষেপ নিলে ওনাদের দাবিগুলোর সঙ্গে কাজ করে যেতে পারি। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পরে আমরা দেখেছি বিভিন্ন জায়গায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হিন্দুসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে। ওই সময় সরকার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও মানুষ চেষ্টা করেছে এসব হামলা, সংঘাত রুখে দেওয়ার জন্য। এরপরও অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল থেকে আমরা তাদের সাহায্য সহযোগিতার চেষ্টা করবো৷ আমরা হয়তো আজ কালের ভিতর সেটি করবো। যাতে ওনারা নিরাপদে ও আনন্দের সঙ্গে পূজা উদযাপন করতে পারেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আরো বলেন, এই দুটি উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে আমরা একটি মেসেজ দিতে চাই, গ্রামে বা শহরে যারা দেশি-বিদেশি চক্রান্তের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সাম্প্রাদায়িক পরিস্থিতিকে বিশৃঙ্খল করে তুলতে চাচ্ছেন এবং গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন, তাদের জেনে রাখা দরকার সরকার খুব নিবিড়ভাবে এই দেশের সব জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোর সঙ্গে নিয়মিত সংলাপের আয়োজন হচ্ছে। নিয়মিত বোঝা পড়া হচ্ছে। সরকার তাদের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নেয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ওপেন আছে। দেশি-বিদেশি কোনো ষড়যন্ত্রকারী কোনো স্পেস পাবে না, এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা। এই প্রতিজ্ঞায় আমরা সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
তিনি আরো বলেন, শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয়, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ও যেভাবে নিপীড়িত বলে অনুভব করছে, নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করছেন, আমরা ওখানকার পরিস্থিতি খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা দেখবো, যাতে তারা নির্বিঘ্নে ও আনন্দের সঙ্গে তাদের প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করতে পারেন। এবং যে উৎসবটি ওনারা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন, আমরা চাই বাংলাদেশে কোনো উৎসব যেনো বন্ধ না হয়। সব জনগোষ্ঠীর নির্বিঘ্নে আনন্দে নিজস্ব উৎসব পালনের অধিকার আছে। সেই অধিকার নিশ্চিতে সরকার বদ্ধ পরিকর। কঠিন চীবর দান উৎসবের ব্যাপারে আমরা খুব শীঘ্রই এমনভাবে ব্যবস্থা নেবো যাতে ওনারাও তাদের উৎসব পালন করতে পারেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২৪
এসসি/আরবি/এমএম