ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মেয়ের বাবা হলেন ছাত্র আন্দোলনে শহীদ রনি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২৪
মেয়ের বাবা হলেন ছাত্র আন্দোলনে শহীদ রনি

বরিশাল: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর মহাখালীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত আল আমিন রনি মেয়ের বাবা হয়েছেন।

সোমবার (৪ নভেম্বর) অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার স্ত্রী মোসাম্মৎ মিম আক্তার কন্যা সন্তান জন্ম দেন।

বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার অস্ত্রোপচার হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ফকরুল ইসলাম মৃধা।

তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বীর শহীদ রনির স্ত্রী মিম ও তার মেয়ে সুস্থ। তারা দুজনই তার তত্ত্বাবধানে আছেন।

চিকিৎসক ফকরুল বলেন, রনি শহীদ হওয়ার পর থেকে আমি ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা মিমকে সার্বক্ষণিক নজরে রেখেছেন। তাকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখার জন্য সব চেষ্টা করেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে ও সরকারি যত ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে সব দেওয়া হয়েছে।

মিমের অস্ত্রোপচারে সহায়তা করেছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কনসালটেন্ট গাইনি ইসরাত শারমিন, অ্যানেসথেলজিস্ট আমিনুর রহমান, আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অনিক নিলয়, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রোমান ইবনে আহাদ।

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর পূর্ব বেতাল গ্রামের বাসিন্দা বাবাহারা আল আমিন রনি মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে রাজধানীর মহাখালীর সাততলা বাউন্ডারি বস্তিতে থাকতেন। গ্রামের বাড়িতে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় মিম থাকতেন গ্রামে।

রনি দিনে মহাখালীর একটি ওয়ার্কশপে কাজ কাজ করতেন। বাড়তি আয়ের জন্য রাতে একটি অনলাইনভিত্তিক খাবার পরিষেবায় কাজ করতেন। একে ফজলুল হক কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করা রনি বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরতে ঢাকা গিয়েছিলেন। তার মা অন্যের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৯ জুলাই দুপুরে মহাখালীতে গুলিবিদ্ধ হন রনি। রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ২০ জুলাই রনিকে বানারীপাড়া এনে দাফন করা হয়।

রনির শ্বশুর মো. কামাল হোসেন মাঝি বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারের কাছে তার মেয়ে মিমের জন্য একটি সরকারি চাকরির দাবি করেছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বানারীপাড়ার অন্যতম সমন্বয়ক সাব্বির হোসেন বলেন, সরকারের সুবিধা ছাড়াও সমন্বয়করা মিমের পাশে ছিলেন। তার চিকিৎসার জন্য যাবতীয় সহযোগিতাও তারা করছেন।

সবসময় মিম ও তার কন্যার পাশে থাকবেন জানিয়ে সাব্বির বলেন, শিশু কন্যা স্বাবলম্বী না হওয়া পর্যন্ত তার ব্যয় সরকারের বহন করা উচিত। মিমের জন্য একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে সরকারের প্রতি তিনিও আহ্বান জানান।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মিমও তার মেয়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে সরকারের সহায়তা চেয়েছেন। তিনি বলেন, আমার মেয়ের জন্মের আগে ওর বাবা শহীদ হয়েছেন। সরকার আমার মেয়ের পাশে থাকবে এটাই আমার চাওয়া।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২৪
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।