ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারে হত্যা: দুই কিশোর ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারে হত্যা: দুই কিশোর ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

ঢাকা: রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের ওপর ছিনতাইকারীদের হাতে হাফেজ কামরুল হাসানের (২৩) নিহত হওয়ার ঘটনায় দুই ছিনতাইকারী কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলো—শাকিল (১৬) ও আশরাফুল ইসলাম (১৭)।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর করাতিটোলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ।

এ দিন দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মফিজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, গত ১৮ ডিসেম্বর হাফেজ কামরুল হাসান তার বন্ধুদের সঙ্গে সাজেক যাওয়ার জন্য রায়েরবাগ বাসস্ট্যান্ড থেকে সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেন। তিনি রাত ৮টা ৪০ মিনিটে যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের সায়েদাবাদ এলাকায় নেমে সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার জন্য ফ্লাইওভার দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। হাফেজ কামরুল ফ্লাইওভারের ওপর সাথী আবাসিক হোটেল বরাবর পৌঁছালে কয়েকজন ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে। ছিনতাইকারীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখিয়ে তার কাছে থাকা নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিতে চায়। ভিকটিম বাধা দেওয়ায় ছিনতাইকারীদের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি শুরু হয়।

ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছিনতাইকারী রোহান তার হাতে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে হাফেজ কামরুলের বুকে আঘাত করে। কামরুল হাসান ফ্লাইওভারের ওপর লুটিয়ে পড়লে ছিনতাইকারীরা তার কাছে থাকা একটি মোবাইল ফোন, যার আনুমানিক মূল্য ১১ হাজার টাকা ও নগদ ৭ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় কামরুল হাসানকে ফ্লাইওভারের ওপর পড়ে থাকতে দেখে রুবেল নামে এক পথচারী চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত ধলপুরের ইসলামিয়া হাসপাতালে নিয়ে যান।

সংবাদ পেয়ে কামরুল হাসানের বাবা দ্রুত হাসপাতালে ছুটে যান। পরে ইসলামিয়া হাসপাতাল থেকে ওইদিনই উন্নত চিকিৎসার জন্য মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) কামরুল হাসানের বাবা মো. ইমাম হোসেন বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

উপ-পুলিশ কমিশনার মফিজুল ইসলাম আরও জানান, মামলাটি তদন্তকালে ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করা হয়। এরপর যাত্রাবাড়ী থানার একটি টিম শনিবার ভোর সাড়ে ৬টায় যাত্রাবাড়ীর করাতিটোলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাকিল ও আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তাররা পেশাদার ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারসহ আশেপাশের এলাকায় পথচারীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, নগদ অর্থ ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করতো। তারা হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। তারা মূলত মাদক সেবনের অর্থ সংগ্রহের জন্য ছিনতাই করতো। ভিকটিম কামরুল হাসানের কাছ থেকে মোবাইল ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় ভিকটিম বাধা দেয়ায় তার সাথে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে রোহান চাকু দিয়ে তার বুকে আঘাত করে। পরে ভিকটিমের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নিয়ে তারা পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। ছিনতাইকারী চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
এমএমআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।