ফেনী: গেল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্মিত মুজিববর্ষের গৃহহীনদের জন্য নির্মিত ঘরগুলোর বেহাল দশা। দেয়ালে হাত লাগলেই খসে পড়ছে আস্তরণ, ফাটল ধরেছে দেয়ালে ও মেঝেতে।
গৃহহীন মানুষগুলো মাথাগোঁজার ঠাঁই পেয়ে খুশি ছিলেন প্রথম দিকে। কিন্তু পাঁচ বছর না পেরুতেই এখন তাদের দিনরাত কাটে আতঙ্কে। উপায় না পেয়ে দুর্যোগের সময়ে ঘর থেকে বের হয়ে ছুটোছুটি করতে হয় বাসিন্দাদের। ঘরগুলো মেরামতের দাবি জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এমন বেহাল দশার কারণে মুজিববর্ষের উপহারের ঘরে থাকছে না বরাদ্দ পাওয়া অনেক পরিবার। বসবাস করছেন অন্যত্র।
সন্তানদের বাড়িতে ঠাঁই না হওয়া স্ত্রীসহ আবদুর রউফ উঠেছিলেন ফেনী শহরতলীর ধর্মপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের মুজিববর্ষের ঘরে। মাথাগোঁজার ঠিকানাটুকু পেয়ে খুশি হলেও এখন প্রতিটি দিন যায় উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায়।
এ আশ্রয়নের সমাজ কমিটির সভাপতি মো. ফারুক বলেন, হাত লাগলেও ঘরে আস্তরণ পড়ে যাচ্ছে, চেয়ার লাগলেও পড়ে যাচ্ছে।
রাবেয়া খাতুন নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ৫০টির বেশি পরিবার বসবাস করলেও নেই কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মানুষ মরলে কবর দেওয়ার জন্য কবরেও ব্যবস্থা নেই। মনে হয় কোনো এক গহীন জঙ্গলে বসবাস করছি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বলছে, মুজিববর্ষের এই ঘরগুলো প্রথমত রাজনৈতিক বিবেচনায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। যার ফলে অনেকের ঘর থাকলেও এই প্রকল্পের ঘর নিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, এসব ঘর নির্মাণে সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাট হয়েছে।
সংগঠনের ফেনী জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ঘরগুলো নির্মাণে রীতিমত লুটপাট হয়েছে। বরাদ্দের অর্ধেক টাকাও ব্যয় হয়নি নির্মাণে। কোনোরকমে জোড়াতালি দিয়ে করা হয়েছে ঘরগুলো।
এদিকে প্রশাসন বলছে, তারা ঘরগুলোর বর্তমান পরিস্থিতি জেনেছেন। সরেজমিনে কিছু ঘর দেখেছেনও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দিলে সেই আলোকে কাজ হবে।
ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরিন কান্তা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে তারা কাজ করবেন সে আলোকে। ঘরগুলো দুরবস্থার বিষয়ে তারাও জেনেছেন।
কয়েক মেয়াদে ভূমি মন্ত্রণালয়, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় , প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের সর্বমোট ১ হাজার ৮২০টি ঘর নির্মাণ করা হয় ফেনীতে।
ঘরগুলোর বেহাল দশার বিষয়ে এই প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৪
এসএইচডি/এসএএইচ