ঢাকা: ১৯৭১ সালের রণাঙ্গণে কোনো এক বাংকারে বসে দেখা হয়েছিল দুই সহযোদ্ধার। ভিন্ন দেশের হলেও তখন দুজনই একটি দেশকে স্বাধীন করার ব্রত নিয়ে জীবন বাজি রেখেছিলেন।
দুজনই এসেছেন যুদ্ধ জয়ের সেই গল্প শোনাতে। অকুতোভয় এই দুই যোদ্ধা হলেন, বাংলাদেশের সাবেক সেনা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুন অর রশীদ বীরপ্রতীক এবং ভারতের সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্নেল এম এম রবি।
রাজধানীর কুর্মিটোলায় আর্মি গল্ফ কোর্সের পাম ভিউ রেস্টুরেন্টে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনার আসরে নিজেদের সেই পরিচয়ের গল্প শোনালেন তারা।
দীর্ঘকাল পরে সহযোদ্ধার সঙ্গে সাক্ষাতে আবেগী হয়ে পড়েন দুজনই। তবে কর্নেল এম এম রবি পরিবচয় পর্বের সেই গল্প শোনানোর দায়িত্ব তুলে দিলেন অপেক্ষাকৃত অনুজ হারুন অর রশীদের ওপর।
বাংলাদেশের সাবেক এই কর্মকর্তা শোনান কীভাবে যুদ্ধকালে কঠিন সময়ে সহায়তার হাত বাড়িয়েছিলেন ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা এম এম রবি। কীভাবে অস্ত্র দিয়ে সাহস যুগিয়েছিলেন শূন্য হাতে থাকা বাংলাদেশের একদল মুক্তিযোদ্ধাকে।
স্মৃতিচারণ করে হারুন অর রশীদ বলেন, “১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের পরে যুদ্ধ করতে করতে এক সময় আমাদের কাছে অস্ত্র গেলাবারুদ কমে আসে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আখাউড়া এলাকায় থাকা ক্যাম্পে আমরা ছিলাম অস্ত্র ছাড়া। এমন অবস্থায় সিদ্ধান্ত নিলাম আমাদের অদূরে থাকা ভারতীয় বাহিনীর ১০ নম্বর বিহার ক্যাম্পে যাওয়ার। একদিনে সেখানে গিয়ে কমান্ডিং অফিসারের সঙ্গে দেখা করতে চাই।
সেখানে যাওয়ার পর মুক্তিবাহিনীর লোক পরিচয় দিলেও অনেক জিজ্ঞাসাবাদের পরে আমাকে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর এম এম রবি এলেন এবং আমাকে বেটা সম্বোধন করে জানতে চাইলেন কী চাই আমাদের। সেই থেকে শুরু। ২/৩ দিন সময় নিয়ে তিনি এগিয়ে এলেন বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায়। ”
এরপর একে একে আগরতলা এয়ারপোর্টের নিরাপত্তা দেওয়া থেকে শুরু করে এম এম রবির আরও নানা সহযোগিতার কথা শোনালেন বীরপ্রতীক হারুন অর রশীদ।
** ‘আজীবন মিত্র বাহিনী থাকবো’
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
জেপি/এমজেএফ