ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাসের সাক্ষী ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার বাড়ি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাসের সাক্ষী ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার বাড়ি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে দিনাজপুরের সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেওয়ার কারণে ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার বাড়িটি লুট করে পাক হানাদার বাহিনী বোমা ও সেল নিক্ষেপ করে ধ্বংস করে দেয়।

দিনাজপুর: ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে দিনাজপুরের সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেওয়ার কারণে ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার বাড়িটি লুট করে পাক হানাদার বাহিনী বোমা ও সেল নিক্ষেপ করে ধ্বংস করে দেয়।

হানাদার বাহিনীর হামলায় জমিদার বাড়িটি ধ্বংস হলেও মুক্তিযুদ্ধের বিশাল ইতিহাস বুকে নিয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে কিছু স্থাপনা।

শত শত মুক্তিকামী মানুষকে আশ্রয় খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা করে মুক্তিযুদ্ধে অসীম অবদান রাখা ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার বাড়িটি ৪৫ বছরেও অবহেলা থেকে মুক্তি পায়নি।

মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মর্টারসেলে বিধ্বস্ত বাড়ি।                                         মুক্তিযুদ্ধে দিনাজপুরের ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার বাড়ির ভূমিকা জানতে চাইলে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী বাংলানিউজকে জানান, ’৭১ এর ২৫ মার্চের গণহত্যার কয়েকদিন পর দিনাজপুরের বাঙালি আর্মি, ইপিআর, পুলিশসহ প্রায় দেড় হাজার মুক্তিযোদ্ধা ২২টি যানবাহন ও প্রচুর অস্ত্রসহ ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামে একটি ক্যাম্প স্থাপন করে।

অন্যদিকে পাক হানাদার বাহিনীর অত্যাচারে দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষ আশ্রয় নেয় ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার বাড়িতে।

ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার পরিবারের সদস্যরা বিপুল সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে। পাকি সেনারা ঘুঘুডাঙ্গার দিকে এলে সাধারণ মানুষদের নিয়ে জমিদার পরিবার ভারতের সীমানায় আশ্রয় নিতেন। ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার পরিবার মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করছে জানতে পেরে হানাদার বাহিনী ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার বাড়িতে আসে।

এর আগেই টের পেয়ে ভারতে পালিয়ে যায় বাড়িটিতে থাকা সব মানুষ। হানাদার বাহিনী বোমা ও সেল নিক্ষেপ করে ধ্বংস করে দেয় বাড়িটি। তার আগে বাড়ির সব দুর্লভ সামগ্রী লুট করে তারা। লুট হওয়া মালামালের মধ্যে একটি সোনার চেয়ার, ১০১ ভরি ওজনের সোনার একটি কৃত্তিম কই মাছ, রূপার বাটযুক্ত একটি সুদর্শন ছাতা, রূপার তৈরি একটি বিরাট হাত পাখা, ৪টি রূপার তৈরি লাঠি ইত্যাদি।

মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মর্টারসেলে বিধ্বস্ত বাড়ি। এছাড়া বড় বড় ভোজ সভায় রান্নার জন্য ১৩/১৪টি বিরাট তামার ডেকচি, সামিয়ানা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ছিল, যা এককালে দিনাজপুর শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিবাহ বা অন্যান্য ভোজ সভার রান্নাবান্নার জন্য ঘুঘুডাঙ্গা থেকে নিয়ে আসতেন। কারণ স্বাধীনতার আগে দিনাজপুর শহরে কোন ডেকরেটরের দোকান ছিল না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।