বগুড়া: ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা ১ মিনিটে স্থির। শুরু হবে রাতের প্রথম প্রহর।
শিশু-কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নানা বয়সী মানুষের হাতে শোভা পাবে গুচ্ছ গুচ্ছ ফুল। দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি ফুলেল শুভেচ্ছা জানাবেন সবাই। বীর সেনানীদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুল ফুলে ভরে দেবেন প্রত্যেক শহীদ বেদি।
দিবসটি সামনে রেখে চারদিকে ফুল বিক্রির ধুম পড়ে গেছে। ফুল বিক্রেতাদের কাছে রয়েছে সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ব্যক্তির অগ্রিম অর্ডার। অর্ডারের ফুল বিক্রি করতেই দিনরাত ব্যস্ত দোকানিরা।
এছাড়া সাধারণ ক্রেতারাও ফুল কেনার দৌঁড়ে পিছিয়ে নেই। তারাও ফুল কিনতে ছুটছেন দোকানে দোকানে। বেছে বেছে কিনছেন পছন্দের সেরা ফুল। সবমিলিয়ে দোকানে দোকানে চলছে ফুল বিক্রির উৎসব।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে বগুড়া শহরের সাতমাথা সংলগ্ন শহীদ খোকন পার্ক রোডের ফুল মার্কেটসহ আশেপাশের বিভিন্ন দোকানে গেলে ফুল ব্যবসায়ী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ফুল কিনতে আসা ক্রেতা সাধারণের সঙ্গে কথা হলে এসব তথ্য উঠে আসে।
ফুল মার্কেটের দোকানগুলোয় থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে হরেক রকমের ফুল। এরমধ্যে গাঁদা, গোলাপ, রজনীগন্ধা অন্যতম। এসব ফুল আকর্ষণীয়ভাবে বেঁধে শ্রদ্ধা জানানোর ফ্রেমে আটকে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন আকারের মালা তৈরি করা হচ্ছে। ব্যস্ত সময় পার করছেন ফুল মার্কেটের দোকানিরা।
ফুল মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বাংলানিউজকে জানান, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ব্যবসায়ীরা কয়েক সপ্তাহ আগ থেকেই ফুল সংগ্রহ শুরু করেন। এক্ষেত্রে স্থানীয় বাজারকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। তবে, চাহিদা বুঝে দূর-দূরান্তের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহর থেকে বাহারি রকমের ফুল আমদানি করা হয়।
ফুল ব্যবসায়ী কাজল দাস ও সুমন ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, কমবেশি প্রত্যেক মানুষ ফুলকে ভালোবাসেন। ফুলকে ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ফুল মার্কেটে ফুল প্রেমিকদের সরব উপস্থিতি তারই প্রমাণ দেয়।
কারণ এই মার্কেটে বছরের বারো মাসই ফুল বিক্রি হয়। এখানকার ব্যবসায়ীরা ফুল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। তবে, বিশেষ দিবসগুলোয় এ মার্কেটে পর্যাপ্ত ফুল বিক্রি হয় বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।
মিলন, রমজান, রহমান মিয়াসহ একাধিক ফুল ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, প্রত্যেক বছর মহান বিজয় দিবসসহ গুরুত্বপূর্ণ দিবসে প্রচুর ফুল বিক্রি হয়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বিভিন্ন সংগঠনসহ ব্যক্তি পর্যায় থেকে ফুল নেওয়ার জন্য আগাম অর্ডার এসেছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই অর্ডার অনুযায়ী ফুল বুঝে দিতে হবে। বর্তমানে তাদের দম ফেলার ফুসরত নেই বলে এসব ব্যবসায়ীরা জানান।
তারা আরও জানান, বড় আকারের প্রত্যেকটি ফুলের তোড়া ৯০০-১০০০ টাকা, মাঝারি আকারের ৬০০-৮০০ টাকা ও ছোট আকারের ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আইয়ুব আলী, ইমরান হোসেন, ফরহাদ হোসেন, সুমি ইসলামসহ বেশ কয়েকজন ক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানতে তারা ফুল কিনতে এসেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
এমবিএইচ/পিসি