জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে: একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানালো লাখো জনতা। বিজয়ের ৪৫ বছরের পূর্তির দিন সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে নেমেছেল নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের ঢল।
বাবার কোলে যেমন ছোট্ট শিশু এসেছিল গালে পতাকা এঁকে, তেমনি মায়ের হাত ধরে কিশোরী এসেছিল লাল-সবুজের জামা পড়ে। স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে বেজে উঠছিল দেশের গান, আর ধীরে ধীরে পা বাড়িয়ে জনতা এগোচ্ছিলেন ফুল নিয়ে। আর স্মৃতিসৌধের বাইরে অপেক্ষাটা ছিল ভোর হওয়ার আগে থেকেই।
কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা জানানোর পর স্মৃতিসৌধ খুলে দেওয়া হয় সাধারণ মানুষের জন্য।
তাদের শ্রদ্ধা জানানোর পর আওয়ামী লীগ, বিরোধী দল জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ নেতৃবৃন্দ, জাসদের হাসানুল হক ইনু, বাসদ, কৃষক-শ্রমিক লীগ, বিকল্প ধারা, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি, বিপ্লবী জাতীয় পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও তাদের অঙ্গসংগঠন ফুলেল শ্রদ্ধা জানায়।
একে একে আসে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড, এনসিটিবিসহ বিভিন্ন শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকেও ফুল দেওয়া হয় স্মৃতিসৌধে।
সেক্টর কমান্ডরস ফোরাম, মুক্তিযাদ্ধা সংসদ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এর পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।
আওয়ামী লীগসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে স্লোগান উঠে জঙ্গিবাদ দমনের, রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশের।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, দুর্নীতি দমন কমিশন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, জাতীয় জাদুঘর, পক্ষাঘাতগ্রস্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র (সিআরপি), বিভিন্ন গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠন, বুড্ডিস্ট ফেডারেশন, শহীদ স্মৃতি পাঠাগার, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির পক্ষ থেকে ফুল
দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
বেলা ১১টা পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শ্রদ্ধা জানানোর সময় পর্যন্ত শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ভিড় থাকলেও দুপুর থেকে আসতে থাকে আরও উৎসুক জনতা।
এদিকে লাখো জনতার উপস্থিতির মধ্যে লাল-সবুজের পতাকা ও ব্যান্ড বিক্রি করে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা। এর সঙ্গে রঙ দিয়ে গালে-হাতে লাল-সবুজের পতাকা একে রাঙিয়ে নেন কেউ কেউ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৬
এমআইএইচ/আরআই