গোপালগঞ্জ: নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে বিএনপি’র অযৌক্তিক কোনো দাবি গ্রহণ করা হবে না। আবার ভালো কোনো পরামর্শ উপেক্ষাও করা হবে না।
তবে, ইসি গঠনের বিষয়টি রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক অধিকার। এরই মধ্যে তিনি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন। রোববার বিএনপি’র সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে এ কাজটি শুরু করেছেন রাষ্ট্রপতি, বলেন মন্ত্রী।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া মুক্ত দিবসের আলোচনা সভা এবং মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী জনতার সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। সভা শুরুর আগে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি লতিফুর রহমানকে প্রধান উপদেষ্টা করে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করেছিল, তা তাদের হয়ে কাজ করেছে। তাই বিএনপি মনে করে, তাদের দাবিগুলো মেনে নিলে ওই রকম একটা নির্বাচন করতে পারবে।
তিনি বলেন, যেসব মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্ত হয়নি, তাদের অনলাইনে আবেদন করতে বলা হয়েছে। ৭ জানুয়ারি থেকে উপজেলা ভিত্তিক যাচাই-বাছাই শুরু হবে। যাচাই-বাছাই করে ভুয়াদের বাদ দেওয়া হবে এবং বাদ পড়া মুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
ভাটিয়াপাড়া মুক্ত দিবসের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন-কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ইসমত কাদির গামা, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি চৌধুরী ইমদাদুল হক।
এতে সভাপতিত্ব করেন কাশিয়ানী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এনায়েতে হোসেন। এই অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার এস এম এমরান হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর, কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোক্তার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক কাজী জাহাঙ্গীর আলম, মুক্তিযোদ্ধা কে এম মানোয়ারুল করিম ও এস এম মহসীন আলী বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে ভাটিয়াপাড়ায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া ১০০ মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়। এর আগে মন্ত্রী ভাটিয়াপাড়া গোলচত্বরে বঙ্গবন্ধু চত্বরের নামফলক উন্মোচন করেন।
এসময় ভাটিয়াপাড়া মুক্তিযুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি যুদ্ধে অংশ নেওয়া অসুস্থ হাফিজুর রহমান হাসমতের মেয়ে মুক্তা খানম প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা একটি খোলা চিঠি মন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, তার বাবা দীর্ঘদিন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পুলিশে চাকরি করেছেন। যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারেননি। তিনি তার বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় রাখার এবং তার চিকিৎসার জন্য সহায়তা করার অনুরোধ জানান।
প্রসঙ্গত, সারাদেশ স্বাধীন হওয়ার তিনদিন পর ১৯ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয় ভাটিয়াপাড়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৬
এসআই