ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কারাগারে ঠাঁই রাজউকের দুর্নীতিবাজ ইকবালের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৬
কারাগারে ঠাঁই রাজউকের দুর্নীতিবাজ ইকবালের দুর্নীতিবাজ ইকবাল পারভেজ

অবশেষে কারাগারে ঠাঁই হলো রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর দুর্নীতিবাজ সাবেক সহকারী পরিচালক (আইন) ইকবাল পারভেজের। সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ঢাকা: অবশেষে কারাগারে ঠাঁই হলো রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর দুর্নীতিবাজ সাবেক সহকারী পরিচালক (আইন) ইকবাল পারভেজের। সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে রোববার(১৮ ডিসেম্বর) ওয়ারি থানায় মামলা করার পর ওই দিন দুপুরেই সেগুনবাগিচা থেকে ইকবাল পারভেজকে গ্রেপ্তার করে দুদক।

কে এই ইকবাল পারভেজ? কি তার পরিচয়?

অনুসন্ধানে জানা যায়, মো. ইকবাল পারভেজ রাজউকের সহকারী পরিচালক হিসেবে পাঁচ বছর চাকরি করেন। এর আগে তিনি সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খানের মুহুরি হিসেবে কাজ করতেন।

অভিযোগ রয়েছে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর দাপটেই বয়স জালিয়াতি করে তিনি এই চাকরিতে যোগ দেন। ইকবাল হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে। তার বাবা জাবেদ আলী গ্রাম-গঞ্জে বাদাম বিক্রি করতেন বলে তথ্য রয়েছে।

এসব তথ্যের বিস্তারিত বর্ণনাসহ ১৫৫ পাতার অভিযোগ পেয়ে গত বছরের শেষের দিকে অনুসন্ধানে নামে দুদক। অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্র জানায়, ইকবাল পারভেজ রাজউকের সহকারী পরিচালক হিসেবে পরিত্যাক্ত সম্পত্তি, বিশেষ করে গুলশান, বনানী ও মতিঝিলে বিভিন্ন সিন্ডিকেটের যোগসাজশে ভূয়া মালিক সাজিয়ে ফাইল গায়েব করে দিতেন।    

এভাবে মূল্যবান সম্পত্তি বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা বানিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন এই ইকবাল পারভেজ।

এক কথায় বলা যায়, ইকবাল পারভেজের উত্তরণ রীতিমতো আলাদীনের চেরাগকেও হার মানিয়েছে।

ওয়ারি থানায় করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, দুদকের অনুসন্ধানেই ইকবাল পারভেজের প্রায় ৬০০ শতাংশ জমি কেনার প্রমাণ রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের সাবরেজিস্ট্রি অফিসে করা ওই সব জমির দাম দেখানো হয়েছে ৩ কোটি টাকার বেশি। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। এসব জমির দাম  আরও অনেক বেশি।

এ ছাড়া টিকাটুলির কিংস প্লাজায় ইকবাল পারভেজের নামে ১ হাজার ৪০০ বর্গফুটের একটি অফিস রয়েছে। যার বাজার মূল্য কয়েক কোটি টাকা। তার একটি গাড়ি ও ব্যাংক একাউন্টের তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে এজাহারে।

দুদকের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে যে তথ্য পাওয়া গেছে তা দিয়েই মামলা করা হয়েছে। তবে ইকবাল পারভেজের সম্পদের পরিমাণ আরও বেশি। তদন্ত পর্যায়ে ওইসব সম্পদের তথ্য প্রমাণও হাজির করা হবে।

তাদের ধারণা ইকবালের সম্পদের পরিমাণ শতকোটি টাকার বেশি।

সূত্র জানিয়েছে, তার নামে কদমতলী এলাকায় ২০ কাঠা জমি, মেরাজনগরে সাততলা ও তিনতলা দুটি বাড়ি, কদমতলী এলাকায় একটি একতলা মার্কেট এবং ঢাকার পূর্বাচলে ১০ কাঠার একটি প্লট রয়েছে, এসবের বাজারমূল্য প্রায় ৭০ কোটি টাকা।

এছাড়া ৭০, ৭১ ইস্টার্ন মহল, দ্বিতীয় তলা, সিদ্বেশরী, রমনা, ঢাকায় একটি ২১শ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ও জাহাঙ্গীর ইঞ্জিনিয়ার টাওয়ার (৩য় তলা) দক্ষিণ সস্তাপুর, উপজেলা রোড ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জে ১১শ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৩-৮৯৮১, মিতসুবিশি জিপ রয়েছে একটি ও ঢাকা মেট্রো-গ ২৯-৪৭৪৪ এফ প্রিমিও গাড়ি রয়েছে যার বাজার মূল্য ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এছাড়া বোন জামাই আনোয়ার হোসেন ওরফে আন্না কাঠমিস্ত্রি ওরফে আনু কাঠ মিস্ত্রির নামে ঠিকাদারির লাইসেন্সে কাজ না করেই গণপূর্তের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

তথ্যমতে, আন্না মিস্ত্রিকেও আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও অনেক নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসবে।

বাংলাদেশ সময় ১৯৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৬
এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।