ঢাকা: কূটনৈতিক শুল্কমুক্ত সুবিধার (প্রিভিলেজ পার্সন) অপব্যবহার করে গাড়ি ব্যবহারের দায়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কর্মকর্তা কিশোর কুমার সিং এর গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর হলুদ নম্বর প্লেটের গাড়িটি জব্দ করে।
কিশোর কুমার সিং আইএলও বাংলাদেশ কার্যালয়ে সিনিয়র স্কিল ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট হিসেবে ২০১৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মরত রয়েছেন।
এর আগে ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশ কার্যালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, ‘প্রিভিলেজ পার্সন হিসেবে ২০১৪ সাল থেকে কূটনৈতিক শুল্কমুক্ত সুবিধার অপব্যবহার করে গাড়ি ও পাসবুক ব্যবহার করে আসছেন কিশোর কুমার সিং’।
‘শুল্ক গোয়েন্দা আগেই তার গাড়ি জব্দ করতে পারতো। কিন্তু সম্মান দেখিয়ে ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে গাড়ি ও পাসবুক জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার এ কর্মকর্তা হাজির না হয়ে আইএলও’র জেনারেল স্টাফ মো. মনির হোসেন খন্দকারের মাধ্যমে গাড়িটি হস্তান্তর করেন’।
তিনি হাজির না হয়ে অসুস্থ রয়েছেন মর্মে একটি চিকিৎসক সনদপত্র পাঠিয়েছেন। আলামত হিসেবে গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। অনুসন্ধান শেষে মামলা করা হবে বলেও জানান ড. মইনুল খান।
ড. মইনুল খান আরো বলেন, জব্দের সময়ও গাড়িটিতে হলুদ রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট (এজস ০৪৬) পাওয়া গেছে। হলুদ নম্বর প্লেট সম্বলিত গাড়ি শুধুমাত্র অনুমোদিত কাস্টমস পাসবুকের বিপরীতে প্রিভিলেজড পারসন ব্যবহার করতে পারেন।
তিনি বলেন, গাড়িটি প্রিভিলেজড সুবিধায় শুল্কমুক্ত ভাবে আমদানিকৃত। কিশোর কুমার সিং গাড়িটি শুল্কমুক্ত সুবিধায় তার পুরনো পাসবুকে এন্ট্রি করেছিলেন।
ইউএনডিপিতে থাকা অবস্থায় তিনি শুল্কমুক্ত সুবিধা গ্রহণ করে গাড়িটি পাসবুকে অন্তর্ভূক্ত করেন (পাসবুক নং ১০৫/১১)। শর্ত অনুসারে ইউএনডিপি ত্যাগ করার সময় পাসবুক ও গাড়ি কাস্টমসের কাছে সমর্পণের কথা থাকলেও তিনি তা করেননি।
আইএলও থেকে নতুন পাসবুক নেওয়ার পরও গাড়িটি তার মেয়াদোত্তীর্ণ পুরনো পাসবুকেই রেখেছিলেন। গাড়িটি ২০১২ সালের পর বিআরটিএ থেকে কোনো ফিটনেস সনদ নেননি। ফিটনেস ছাড়া ও পুরনো নম্বর হলুদ নম্বর প্লেটে গাড়িটি ব্যবহার করছিলেন।
ড. মইনুল খান বলেন, অবৈধ গাড়ি আটক অভিযান শুরু হলে গত ২৬ অক্টোবর এনবিআরে কাছে শুল্ক গোয়েন্দা থেকে গাড়িটি নতুন পাসবুকে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করা হয়। গাড়ি ও পাসবুক ব্যবহার করে তিন ধরনের অপরাধ করেছেন কিশোর কুমার সিং।
বক্তব্য জানতে তাকে তলব করা হবে। আইএলও’র আবাসিক প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করে তার বিরুদ্ধে কাস্টমস আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ড. মইনুল খান বলেন, ২১ ডিসেম্বর থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত এনফোর্সমেন্ট মাস ঘোষণা করেছে এনবিআর। এরই মধ্যে শুল্ক গোয়েন্দা কূটনৈতিকের গাড়ি জব্দ করেছে। আইন ভঙ্গ করে এ ধরনের যতো গাড়ি আছে, সব জব্দ ও আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
** গাড়ি ও পাসবুক জমা দিতে আইএলও কর্মকর্তাকে নির্দেশ
বাংলাদেশ সময়: ২২০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
আরইউ/এএসআর