ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

থার্টিফার্স্টে হামলার আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের, কড়া নিরাপত্তা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৬
থার্টিফার্স্টে হামলার আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের, কড়া নিরাপত্তা

থার্টিফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ইতিমধ্যে নগরীর বিভিন্ন প্রবেশপথে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজধানীসহ সারাদেশে এ ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

ঢাকা: থার্টিফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ইতিমধ্যে নগরীর বিভিন্ন প্রবেশপথে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট।

যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজধানীসহ সারাদেশে এ ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।  

পুলিশের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো হামলার আশঙ্কা নেই বলা হলেও থার্টিফার্স্ট নাইটে ঢাকায় সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের। এজন্য বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছে দেশটি।  

শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে এ সতর্কতা জারি করা হয়। সতর্ক করা হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের টুইটার বার্তাতেও। ঢাকায় দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী সহিংসতার আশঙ্কা বিদ্যমান। ২০১৬ সালের ১০ জানুয়ারি ভ্রমণ-সতর্কতা এখনো কার্যকর এবং সন্ত্রাসী হামলা এখনো হতে পারে। ব্যাপক জনসমাগমস্থল বা ভিড় এবং যেসব এলাকায় বিদেশি নাগরিকরা বেশি চলাফেরা করেন, এমন জায়গা এড়িয়ে চলারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ওই বিবৃতিতে।  

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টুইটার অ্যাকাউন্টে জানানো হয়, ‘নববর্ষ উদযাপন সামনে রেখে বাংলাদেশ সরকার ঢাকায় নিরাপত্তা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। ছুটির মৌসুমে স্থানীয় নিরাপত্তা উন্নয়নের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। ’ 

ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া জানান, ঢাকায় থার্টিফার্স্টে সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই। তারপরও নগরবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে থার্টিফার্স্টে উন্মুক্ত স্থানে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। অনুমতিসাপেক্ষে ক্লাব, হোটেল ও রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠান করা যাবে। এদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, বার, উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান, জনসমাবেশ ও লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।  

এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, গুলশান, বনানী ও বারিধারায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ নজরদারি। এমনিতেই হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর কূটনৈতিকপাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। তবে থার্টিফার্স্ট নাইট ঘিরে আরও বেশি তত্পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী- জানিয়েছেন মহানগর পুলিশ প্রধান।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে টহল পুলিশ, চেকপোস্ট, সিসিক্যামেরা, আর্চওয়ে রাখারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার আশপাশে পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। থাকছে নিয়মিত টহলের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ। আর যদি কেউ ব্যক্তিগতভাবে বাসায় থার্টিফার্স্ট নাইট অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এবং পুলিশকে জানান তাহলে তাদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হবে। কোথাও আতশবাজি বা পটকা ফোটানো যাবে না। রাত ৮টার পর হাতিরঝিলে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। গুলশান থেকে হাতিরঝিল হয়ে বেরিয়ে যাওয়া যাবে। তবে প্রবেশ বন্ধ থাকবে। থার্টিফার্স্টে সন্ধ্যার পর পরই নগরবাসীকে ঘরে ফিরতে হবে। থানা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে ডিবি, কাউন্টার টেররিজম ইউনিটসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন।  

র‍্যাব সূত্র জানায়, তাদের পক্ষ থেকেও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নানা স্থানে বিশেষ নিরাপত্তাসহ টহল ও চেকপোস্ট থাকবে। রাজধানীসহ সারা দেশের র‍্যাব ব্যাটালিয়নকে এ ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানায়, জননিরাপত্তার জন্য কয়েক স্তরের নিরাপত্তাবলয় তৈরি করা হবে। এ রাতে নগরবাসীর নিরাপত্তায় মাঠে থাকবেন পুলিশের ১০ হাজার সদস্য।  

রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্পটে চেকপোস্ট ও ব্লক রেড চলমান রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পর বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা শুধু আইডি কার্ড দেখিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন। ক্যাম্পাসে বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার লাগানো গাড়ি নিয়ে নীলক্ষেত ও শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন। আর কূটনৈতিকপাড়ার বাসিন্দাদের রাত ৮টার মধ্যে স্ব স্ব এলাকায় চলে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। কূটনৈতিক জোনে প্রবেশের জন্য কাকলী ও আমতলী ক্রসিং খোলা রাখা হবে। তবে নির্ধারিত সময়ের পরও পরিচয় দিয়ে এ দু’টি ক্রসিং দিয়ে গুলশান, বনানী ও বারিধারার বাসিন্দারা প্রবেশ করতে পারবেন। জনগণের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যারা বসবাস করেন না তাদের ওই সব এলাকায় যেতে দেওয়া হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৬
জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।