ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বৈদ্যুতিক গোলযোগ না কি নিক্ষিপ্ত সিগারেটে অগ্নিকাণ্ড?

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৭
বৈদ্যুতিক গোলযোগ না কি নিক্ষিপ্ত সিগারেটে অগ্নিকাণ্ড? আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত লাকী ডায়িং। ছবি: সুমন শেষ

ঢাকা: শ্যামপুরে লাকী ডায়িং কারখানায় (নতুন নাম: এমজে ডায়িং) অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান করছে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স।

এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত সম্পর্কে নিশ্চিত না হলেও প্রাথমিকভাবে ফায়ার সার্ভিস ধারণা করছে, বৈদ্যুতিক গোলযোগ অথবা নিক্ষিপ্ত সিগারেটের আগুন থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতে পারে।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) মো. আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এখনও কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাইনি।

তবে প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার দুটি কারণ ধারণা করছি।

তিনি বলেন, বৈদ্যুতিক গোলযোগ অথবা নিক্ষিপ্ত সিগারেটের আগুন থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি।

তবে ঘটনাটি তদন্তের পর সুনির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে বলা যাবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে, সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে শ্যামপুরে লাকী ডায়িং কারখানার তিনতলায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করে সকাল ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ আটকা পড়া ৩৫ জনকে নিরাপদে উদ্ধার করতে পেরেছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ছয়তলা এই ভবনটিতে বাহির ও প্রবেশের জন্য একটি মাত্র সিঁড়িপথ রয়েছে। তবে ভবনে অগ্নিনির্বাপকের কোনো ব্যবস্থা নেই।

লাকী ডায়িং কারখানার নিরাপত্তা কর্মী মো. রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এখানে দুই শিফটে মোট ২৫০ জন শ্রমিক কাজ করেন। ভবনের তিনতলায় ছিল প্রধান গোডাউন। আগুনের সূত্রপাত সেখান থেকেই হয়েছে। তবে কিভাবে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে সেটি আমার জানা নেই।

এদিকে কারখানার ফিনিশিং সেকশনের শ্রমিক মানিক বাংলানিউজকে জানান, যখন ভবনে আগুল লাগে তখন ভেতরে আনুমানিক দেড়শ’ শ্রমিক কাজ করছিল। আর ২৬ জন শ্রমিক ভবনের ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় বিশ্রাম নিচ্ছিল। আগুনের ঘটনায় অনেকে বাইরে বের হলেও ১০ থেকে ১৫ জন ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় উঠে যায়। এদিকে পাঁচ জনকে ভবনের তিনতলার জানালা ভেঙে বাইরে বের করা হয়।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারখানাটি বন্ধ রয়েছে। ভেতরে ডাম্পিংয়ের কাজ করছে শ্রমিকরা। এ বিয়ষে শ্রমিকরা জানায়, মালিক পক্ষ থেকে কারখানা খোলার কোনো সংবাদ আমরা পাইনি। তবে আগামী দুই এক দিনের মধ্যে আবার কাজ শুরুর বিষয়ে মালিক পক্ষের নির্দেশনা পাওয়া যেতে পারে।

অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় কদমতলী থানা পুলিশ। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের পাশাপাশি পুলিশও উদ্ধার তৎপরতা চালায়।

কদমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল বাংলানিউজকে বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভবনে থাকা শ্রমিকদের দ্রুত উদ্ধার করা হয়, এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

কারখানার শ্রমিকদের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারখানার আনুমানিক ১ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এ ঘটনায় এখনও কোনো কারখানার মালিক পক্ষ থেকে কেউ থানায় আসেনি। যদি তারা কোনো অভিযোগ দেয় তবে আমরা ব্যবস্থা নেব।

জানা গেছে, রাজধানীর শ্যামপুরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত লাকী ডায়িং প্রতিষ্ঠানের ছয়তলা ভবন মালিক মিজানুর রহমান। তার কাছ থেকে মানিক মাস্টার ও আব্দুর রাজ্জাক ভবনটি ভাড়া নিয়ে লাকী ডায়িং পরিচালনা করে আসছিল। এই ডায়িং এ ডে-নাইট দুই শিফটে মোট ২৫০ শ্রমিক কাজ করেন। ভবনের তিনতলায় মেইন গোডাউন। এছাড়াও ভবনের প্রতিটি তলায় রয়েছে প্রিন্টিং সেকশন।

বাইরে থেকে প্লেন কাপড় এনে এই কারখানাতে ডায়িং ও প্রিন্টিংয়ের কাজ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৭
এসজেএ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।