মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) মৃত ছনিয়ার মা শেফালী বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় মৃতের সম্পর্কে চাচা ও মূল অভিযুক্ত আসাদ খান, তার ছোট ভাই আরিফ খান, উভয়ের বাবা মোশারেফ হোসেন পান্না খান এবং আসাদের মামাতো ভাই তারেককে আসামি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মঙ্গলবার রাতে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদুজ্জামান বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়েছে।
এদিকে, মামলায় ধর্ষণ এবং পুড়িয়ে মারার অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৃতের মামা জালাল শেখ।
গত ২৭ ডিসেম্বর সকালে চরাদি গ্রামের নওয়াব আলী খান বাড়ির বাসিন্দা হতদরিদ্র দুলাল খানে ছোট মেয়ে ও স্থানীয় শেরে বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছনিয়া আক্তার একই বাড়ির বাসিন্দা ধর্ষণের শিকার হন। এরপর সে নিজ ঘরে গিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। টানা ৫ দিন চিকিৎসার পর (৩১ ডিসেম্বর) রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার রাতে স্বজনরা তার গ্রামের বাড়িতে মৃতদেহ নিয়ে এসে মঙ্গলবার সকালে দাফনকার্য সম্পন্ন করেন।
মৃত ছনিয়ার বড়বোন সুরাইয়া আক্তার জানান, ছনিয়া একা বাসায় থাকাকালীন সময়ে পাশের ঘরের পান্না খানের ছেলে আসাদ খান তাকে ডিম ভেজে দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যান। আসাদ সম্পর্কে চাচা হওয়ায় কোনো বিপদের আশঙ্কা ছাড়াই ছনিয়া তাদের ঘরে যায়। এ সময় সে ঘরে কেউ না থাকায় আসাদ ছনিয়াকে ধর্ষণ করে।
তবে ছনিয়ার গায়ে আগুন লাগার বিষয়ে রয়েছে ভিন্নমত, স্বজনদের কেউ দাবি করেছেন লজ্জায় ও ভয়ে ছনিয়া নিজ গায়ে কেরোসিন দিয়ে আত্মহনন করেছে, আবার মায়ের দাবি তার মেয়েকে পুরিয়ে মারা হয়েছে।
মৃতের মা শিউলি বেগম জানান, ঘটনার সময় আসাদদের ঘরে আরো কয়েকজন ছেলে ছিলো। আমার মেয়ের ওরাই ক্ষতি করে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই। এমন বিচার হোক যাতে আর কোনো মেয়ের সঙ্গে এমন না হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৮
এমএস/এএটি