বুধবার (৩ জানুয়ারি) সকালে রাষ্ট্রপক্ষ নয় সাক্ষীকে হাজির করলেও সময় স্বল্পতার কারণে শুধু বাদী আমিনুল ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। আমিনুল মধুপুর উপজেলার অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই)।
টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ কে এম নাসিমুল আক্তার জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়া সকাল ১১টায় এজলাসে উঠে প্রথমেই চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেন। এরপর মামলার বাদী আমিনুল ইসলাম সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সাক্ষীর কাঠগড়ায় আসেন। এসময় আসামি পক্ষের আইনজীবী শামীম চৌধুরী আদালতে একটি আবেদনে জানান, মামলার জাহাঙ্গীর নামক আসামির বয়স অভিযোগপত্রে ১৯ বছর উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে জাহাঙ্গীরের বয়স ১৭ বছর। আবেদনের সঙ্গে জন্মসনদের ফটোকপিও দাখিল করেন তিনি। জাহাঙ্গীরকে তিনি শিশু হিসেবে পৃথক আদালতে বিচারের দাবি জানান। পরে বিষয়টি যাচাই বাছাইয়ে জন্য দুই ঘণ্টা আদালত মুলতবি করা হয়। পরে আদালতের সেরাস্তাদার ও কোর্ট পুলিশ যাচাই বাছাই করে জন্মসনদটির সত্যতা পায়নি।
দুপুর ১টায় ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবার এ মামলার বিচার কাজ শুরু করেন। পরে আসামি পক্ষের আবেদনের বিষয়ে শুনানি হয় এবং দাখিল করা জন্মসনদের সত্যতা না থাকায় আসামি পক্ষের আইনজীবীর করা আবেদনটি খারিজ করে সাক্ষ্যগ্রহণের শুরু করেন আদালত। বাদী পক্ষে পিপি ছাড়াও তিন আইনজীবী এস আকবর খান, আব্দুল করিম ও আতাউর রহমান আজাদ শুনানিতে অংশ নেন।
প্রথমে মামলার বাদী আমিনুল সাক্ষ্য দেন। এসময় ঢাকা থেকে আসা আসামি পক্ষের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন ও শামীম চৌধুরী সাড়ে তিন ঘণ্টা বাদীকে জেরা করেন।
সময় স্বল্পতার কারণে বাকি সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়নি। রোববার ও সোমবার বাকি আটজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে। এদিকে, সাক্ষ্যগ্রহণকালে মামলার পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।
উল্লেখ্য, উল্লেখ্য, ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজের শিক্ষার্থী রূপার বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আসানবাড়ি গ্রামে। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট ছোঁয়া পরিবহনের বাসে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাচ্ছিলেন তিনি। এসময় রূপাকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ করে হত্যা করেন বাস শ্রমিকরা। পরে মরদেহ মধুপুর উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকায় ফেলে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাসটির হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামিরা বর্তমানে টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৮
এসআই