অবশেষে সৌদিয়ার বাসে চড়ার এই খায়েশ 'মিটলো' বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) রাতে। ঢাকা থেকে গন্তব্য ফেনী।
কাউন্টারে ঢুকেই বাস আছে কিনা জানতে চাইলে উত্তর এলো 'রানিং আছে'। 'রানিং মানে ক'টায় ছেড়ে যাবে?' 'এই তো আসছে'। 'ভাই, টাইম আছে না সেটার'। 'আচ্ছা ১২টা ১০'।
২ জনের টিকিট ৪০০ করে ৮০০ টাকা। এরপর বিমানবন্দর থেকে আসা গাড়ি থেকে দু'টি মালামালের কার্টন নামাতেই কাউন্টারকর্মীরা একটু ভ্রু কুঁচকালেন। মিনিট দশেক পর গাড়ি এলো। তবে ১২টা ১০ মিনিটের নয়। কাউন্টারকর্মীরা বললেন আগের গাড়ি, কিন্তু চঞ্চলকর্মীরা যেন উতলা হয়ে পড়লেন।
'এই যে ভাই, এই গাড়ির সিট খালি আছে, এটাতে চলে যান'। বেশ খুশি লাগলো, মনে হলো, 'বাহ, এভাবে কেউ যাত্রীদের জন্য ভাবে'। কিন্তু কাউন্টারকর্মী যে আরও কিছু বলবেন, 'মাল আছে?' 'হুম, এই যে। ' 'ভাড়া দেন মালের'।
চোখ কপালে উঠলেও মুখ দিয়ে প্রশ্ন বেরোলো, 'কতো?' '৩০০ টাকা। ' 'কী বলেন? যাত্রীর আবার কীসের মালামালের ভাড়া?' 'ভাড়া লাগে তো'। 'যাত্রীপ্রতি অ্যালাও কয় কেজি করে?। এই প্রশ্নটা বোধ হয় স্বাভাবিক ছিলো না! একটু থতমত খেয়ে কাউন্টারকর্মীরা উত্তর দিলেন, '১০ কেজি'।
'তাই বলে এই ১৫-২০ কেজি করে কার্টন দুইটার জন্য ৩০০ টাকা চাইবেন?', 'আচ্ছা ২০০ টাকা দেন'। প্রথমে টিকিট কাটার সময়ই কেন মালামালের ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করা হলো না, এ ব্যাপারে ক্ষোভ কাজ করলেও বাকবিতণ্ডা-বিরোধী মন আর বিতর্কে যেতে দিলো না। কেবল মনে প্রশ্ন জাগলো, 'যাত্রীবাহী পরিবহন তো যাত্রীর মালামালের জন্য এভাবে ভাড়া নেয় না! সৌদিয়া কি এভাবে ভাড়া নেয়?'
গাড়িতে ওঠার পর সৌদি আরব-ফেরত যাত্রী যে সিটে বসলেন, সেটার হেলান দেওয়ার অংশটা সোজা করা গেলো না অনেক কায়দা করেও। সিটের স্প্রিংটা মনে হলো নষ্ট হয়ে গেছে। সৌদিতে কড়া পরিবহন নিয়ম দেখে আসা সহযাত্রী জিজ্ঞেস করলেন, 'মালের ভাড়া কি শুধু শুধু নিলো?' মুখে হাসি দেখে তিনিও হাসলেন, বুঝলেন অনিয়মটা কতো শেকড়ে ঢুকে গেছে।
রাত ৯টারও আগে বিমানবন্দরে অবতরণ করা যাত্রী যখন পৌনে দু'ঘণ্টা পরে বের হওয়ার সুযোগ পান, ঘণ্টা ধরে বেল্টে মালামালের জন্য বসে থাকেন, তাকে কি আর অনিয়ম নিয়ে কিছু বলা লাগে?
বাংলাদেশ সময়: ০৫২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৮
এইচএ/