ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গাজীপুরে অবৈধ ইটভাটা চালু করলেই আইনগত ব্যবস্থা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৮
গাজীপুরে অবৈধ ইটভাটা চালু করলেই আইনগত ব্যবস্থা গাজীপুরের ইটভাটা। ছবি: বাংলানিউজ

গাজীপুর: গাজীপুর সিটি করপোরেশন (গাসিক) এলাকায় লাইসেন্স ছাড়া অথবা অবৈধভাবে ইটভাটা চালু করলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শুক্রবার (২ নভেম্বর) সকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বিষয়টি বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।  

এলাকাবাসী ও ইটভাটা মালিক সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ী থানার বাইমাইল, কাতলাখালী, বাঘিয়া, আহাকী ও জয়েরটেকসহ বাসন থানার ইসলামপুর  এবং বাসন এলাকায় গড়ে উঠেছে ইটভাটা।

এসব ইটভাটা ১৫ থেকে ২০ বছর আগেই গড়ে উঠেছে।  

গাজীপুর সিটি করপোরেশন হওয়ার পর থেকে বৈধভাবে কোনো ইটভাটা চলছে না। অনেক ইটভাটার মালিকরা উচ্চ আদালতে রিট করে এসব ইটভাটা চালাচ্ছেন। এ কারণে প্রশাসন অনেক সময় ওই ইটভাটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এতে দিনের পর দিন চলছে ইটভাটাগুলো।  

এদিকে ইটভাটা মালিকদের দাবি হঠাৎ করে ইটভাটা বন্ধ করে দিলে শতশত লোক বেকার হয়ে পড়বে। আর ইটভাটা মালিকদের পথে বসতে হবে।  

গাজীপুরের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম জানান, ইটভাটার কালো ধোঁয়া বাতাসে মিশে এদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। পাশাপাশি ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় নগরবাসি অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। এছাড়া ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় স্থানীয়দের শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণে সমস্যা হয়। সিটি করপোরেশন এলাকায় ইটভাটার ট্রাক চলাচলে ভাটার আশপাশের মানুষগুলোকে প্রতিনিয়ত পড়তে হয় নানা সমস্যায়। সরকারের নিয়ম-নীতি মেনে ইটভাটাগুলো চলুক এটাই আমাদের কাম্য।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইটভাটার মালিক জানান, সিটি করপোরেশন এলাকায় ইটভাটার চালানোর কোনো নিয়ম নেই। এটা আমরাও জানি। কিন্তু হঠাৎ ভাটা বন্ধ করে দিলে মালিকদের পথে বসতে হবে। বেকার হয়ে পড়বে শত-শত শ্রমিক। তবে অনেক ভাটার মালিকরা গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে তাদের ইটভাটা সরিয়ে নিচ্ছেন। সিটির মধ্যে অনেক ইটভাটা উচ্চ আদালতে রিট করে চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

গাজীপুর পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আব্দুস সালাম সরকার বাংলানিউজকে জানান, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত বছর গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ইটভাটা ভেঙে দেওয়াসহ জরিমানা করা হয়েছে। কিছু ইটভাটার মালিকরা উচ্চ আদালতে রিট করায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।  

গাজীপুর জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বাংলানিউজকে জানান, কোনো অবস্থাতেই গাজীপুরে অবৈধভাবে ইটভাটা চলতে দেওয়া হবে না। সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত কোনো ইটভাটার লাইসেন্স নেই। তাদের নতুন করে কোনো লাইসেন্সও দেওয়া হচ্ছে না। অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  

গাজীপুর সিটি মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনো এলাকায় লাইসেন্স ছাড়া অথবা অবৈধভাবে ইটভাটা চালু করলেই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিটি করপোরেশন এলাকায় ইটভাটা চালানোর কোনো নিয়ম নেই। সিটি করপোরেশন থেকে কোনো ইটভাটাকে লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে না। এরপরও অনেকেই লাইসেন্স ছাড়া অবৈধভাবে ইটভাটা চালু করছে। সিটি করপোরেশন এলাকার মধ্যে কোনো অবৈধ ইটভাটা চলতে দেওয়া হবে না।  

গাজীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বাংলানিউজকে বলেন, যেখানে বাড়ি ঘর নাই সেখানে ইটভাটা থাকতে পারে। এই যে এতো বাড়ি ঘর হচ্ছে ইটভাটা না থাকলে মানুষ ইট পাবে কোথায়? তবে পরিবেশ দূষণ করে না। যাতে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি না হয়। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে এবং পরিবেশের বিধি বিধান মেনে ইটভাটা করা উচিত।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৮ 
আরএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।