ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলা: ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড চায় পিবিআই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২০
সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলা: ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড চায় পিবিআই

ঢাকা: রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে চাঞ্চল্যকর সগিরা মোর্শেদ খুন হওয়ার ৩০ বছর পর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় চার আসামি জড়িত উল্লেখ করে প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দিতে যাচ্ছে সংস্থাটি।

গত তিন দশকে পুলিশের বিভিন্ন সংস্থার ২৫ জন তদন্ত কর্মকর্তার হাত বদলের পর ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে পিবিআই।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এক হাজার ৩০৯ পৃষ্ঠার চার্জশিট আদালতে দাখিল করবে পিবিআই।

দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার।

তিনি বলেন, ঘটনার পুরোপুরি ৩০ বছর পর মামলাটির তদন্তভার পায় পিবিআই। তদন্তভার পাওয়ার পর তিন ধাপে মোট ছয় মাস পর চারজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হচ্ছে। দীর্ঘ ৩০ বছর পর এটিকে একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। হত্যাকাণ্ডে চারজনের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে চার্জশিট দাখিল করা হচ্ছে।

মামলার আসামিরা হলেন- নিহত সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন, হাসান আলীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও ভাড়াটে খুনি মারুফ রেজা।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার।  ছবি: বাংলানিউজ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে প্রকাশ্য দিবালোকে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন সগিরা মোর্শেদ। পিবিআই দীর্ঘদিনের মামলাটি দায়িত্ব নিয়ে দ্রুত সময়ে অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে বলে জানান পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।

তিনি বলেন, মামলটি যখন পিবিআইয়ের কাছ আসে তখন আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিই। তদন্ত করতে গিয়ে আমরা জানতে পারি নিহত সগিরা মোর্শেদের পরিবারের সঙ্গে আসামি শাহীনের বিভেদ তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে শাহীন, যিনি তার তিন তলার বাসা থেকে সগিরা মোর্শেদের রান্না ঘর ও বারান্দায় ময়লা ফেলতেন। এছাড়া সগিরাকে তার শাশুড়ি অনেক পছন্দ করতেন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও সগিরা-শাহীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল।

বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ঘটনার আগে সগিরার কাজের মেয়ে জাহানুরকে মারধর করে ডা. হাসান আলী চৌধুরী। এই নিয়ে পারিবারিক বৈঠকে শাহীন সগিরাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। আসামিদের নিয়ে রাজারবাগে বাসার তৃতীয় তলায় সগিরাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শাহীন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ডা. হাসান আলী তার চেম্বারে আসামি মারুফ রেজার সঙ্গে ২৫ হাজার টাকায় হত্যার চুক্তি করেন। ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মারুফ রেজা ও আনাস মাহমুদ প্রকাশ্য দিবালোকে সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যা করেন।

এই ঘটনায় ২৫ জন কর্মকর্তা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান। মামলা চলাকালে ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও রহস্য উদঘাটন করতে পারেননি কেউ-ই। এর মধ্যে একজনকে অভিযুক্ত করে একবার চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল। পিবিআইর চার্জশিটে এর আগে অভিযুক্ত সবাইকে দায়মুক্তি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বনজ মজুমদার।  

** ৩ দশক পর সগিরা হত্যার স্বীকারোক্তি চিকিৎসক দম্পতির
** সগিরা মোর্শেদ হত্যার তদন্তে আরও ৬০ দিন সময়
** স্ত্রীর প্ররোচণায় সগিরাকে খুন করান ভাসুর হাসান

বাংলাদেশ সময়: ১৪০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২০
পিএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।