ঢাকা: দুদকের প্রতি ৮৬ শতাংশ মানুষের আস্থা দায়িত্ব আরো বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
রোববার (২৯ নভেম্বর) গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ একথা জানান।
সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) ‘গ্লোবাল করাপশন ব্যারোমিটার এশিয়া ২০২০’ শীর্ষক প্রতিবেদন বলা হয়েছে দেশের ৮৬ শতাংশ মানুষ দুদকের প্রতি তাদের আস্থা ব্যক্ত করেছেন।
এ বিষয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদক এ জাতীয় প্রতিবেদন সব সময়ই গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করে। এখন পর্যন্ত প্রতিবেদনটি অমরা পূর্ণাঙ্গভাবে পর্যালোচনা করিনি। আপনাদের কাছ থেকেই আমরা জেনেছি, দেশের ৮৬ শতাংশ মানুষ দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি আস্থা ব্যক্ত করেছেন।
‘আমি মনে করি, জনগণের প্রতি দুদকের দায়িত্ব আরো বাড়লো। তাদের এই আস্থা টেকসই করতে হবে। দুদককে নিরবচ্ছিন্নভাবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ’
তিনি বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হলে দুর্নীতি শনাক্তকরণ, অনুসন্ধান, তদন্ত ও প্রসিকিউশন নিখুঁতভাবে করার কোনো বিকল্প নেই। কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতিপরায়ণদের কাছে এই বার্তা পৌঁছাতে হবে যে, দুর্নীতি করলে আইনের মুখোমুখি হতেই হবে। কঠোর শাস্তি পেতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশে এমনকী বিদেশে পালিয়েও শান্তিতে থাকা যাবে না। দুদক পিছু ছাড়বে না। এক্ষেত্রে কারো ব্যক্তিগত পরিচয়, সামাজিক, পেশাগত, ধর্মীয় অন্য কোনো পরিচয়ে কাজ হবে না। আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, বিগত প্রায় পাঁচ বছরে আমরা দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের চেষ্টা করেছি। ব্যক্তি আমাদের কাছে মুখ্য বিষয় ছিল না। আমাদের কর্মপ্রক্রিয়ায় সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ বিষয় ছিল অপরাধের ধরন, ব্যাপকতা ও বিদ্যমান আইন ও বিধি-বিধান।
‘জনহয়রানি যাতে না ঘটে, সেক্ষেত্রে অপরাধী শনাক্তকরণে সতর্কতার সঙ্গেই দায়িত্ব পালনে চেষ্টা করেছি। ’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, সরকারি পরিষেবা প্রাপ্তিতে ঘুষ-দুর্নীতির প্রকোপ রয়েছে একথা আমরা কখনও অস্বীকার করি না। তবে ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধে আমরা বহুমাত্রিক ব্যবস্থা নিয়েছি। তৃণমূল পর্যায়ে দুর্নীতি ঘটার আগেই তা প্রতিরোধে কমিশন প্রায় প্রতিদিনই অভিযান পরিচালনা করছে।
‘বিগত পাঁচ বছরে ফাঁদ মামলার মাধ্যমে অসংখ্য ঘুষখোরকে ঘুষের টাকাসহ হাতে-নাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের কারো কারো বিচারিক আদালতে সাজাও হচ্ছে। গণশুনানির মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের কণ্ঠকে উচ্চকিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। গণশুনানির মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের অসংখ্য সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটা সমম্বিত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ’
তিনি আরো বলেন, সরকারি সেবা দেওয়া সরকারি কর্মচারীদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। কতিপয় অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারী এ দায়িত্ব পালনের নামে ঘুষের মতো ফৌজদারি অপরাধে জড়িত হচ্ছেন। এদের পরিণতি সুখকর হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২০
ডিএন/এএ