মেহেরপুর: ‘সপাং সপাং’ শব্দের তালে পড়ছে ‘ফলুই আর চাকজাল’। চাকজালে ধরা পড়া জাপানি রুইয়ের শব্দ মাছ শিকারিদের বাড়িয়ে দিচ্ছে আরও গতি।
জাপানি রুই, শৈল, মৃগেল, মিনারকাপ, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের দেশি মাছ ধরে আনন্দ করেছেন সৌখিন মাছ শিকারিরা।
সোমবার (৩০ নভেম্বর) সকাল থেকেই এলাকার শত শত মৎস্য শিকারি ফলুই ও চাকজাল নিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে নামেন বিলে। গাংনী উপজেলার নওপাড়া৷ সাহারবাটি, ভাটপাড়া, গাঁড়াডোব, বাঁশবাড়িয়া, শিশিরপাড়া, মালশাদহ, হিজলবাড়িয়াসহ আশেপাশের ১০-১২টি গ্রামের লোকজন মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠেন। অনেকেই দুই-তিন কেজি ওজনের মাছ ধরতে পারলেও অনেকেই ফিরেছেন শুন্য হাতে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার কালিগাংনী গ্রামের আমিনুল ফজলুর রহমান ও বজলু, আমানুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের গ্রাম থেকেই প্রায় ৬০-৭০ জন মাছ ধরতে এসেছি। আমারা সবাই দু-একটা করে বড় মাছ পেয়েছি।
হিজলবাড়িয়া গ্রামের আসাদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, মাছ ধরা আমাদের শখ। একটা তিন কেজি ওজনের জাপানি রুই মাছ পেয়েছি। আজকে আমি সবচেয়ে সুখী মানুষ।
বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মিজান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের গ্রাম থেকে ১০-১৫ জন মাছ ধরতে এসেছি। আমি এবং রকিবুল ইসলাম ২-৩ কেজি ওজনের একটি একটি করে জাপারি রুই মাছ ধরেছি। এছাড়া আমাদের গ্রামের অনেকেই জাপানি মৃগেল, রুই তেলাপিয়াসহ ছোট ছোট দেশি মাছ ধরেছে।
গাঁড়াডোব গ্রামের সজিব মিয়া ও আসাদুল ইসলাম বলেন, এর আগে ৯৮’ সালে এভাবে খাল-বিলে মাছ পাওয়া গেছিল। দীর্ঘদিন পর খাল বিলে মাছ পেয়ে সেই আগের দিনে ফিরে গেছি।
জানা যায়, মালশাদহ গ্রামের ইনামুল হকের ১০ বিঘা, দবির উদ্দিনের ২ বিঘা, আশরাফুল ইসলামের ৫ বিঘা, হাজী মোস্তফার ১০ বিঘা, ঠান্ডু মিয়ার ৮ বিঘা, চৌগাছা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ৩ বিঘা, মইনদ্দিন হোসেনের ৪ বিঘা, আমারত মিয়ার তিন বিঘাসহ প্রায় ৬-৭শ’ বিঘা জমির আয়তনের এ বিলটিতে সারাবছর ফসলের চাষ হলেও দীর্ঘ মেয়াদী অতি বর্ষণের ফলে মালশাদহ, হিজলবাড়িয়া চৌগাছা, সাহারবাটি, কুরবাড়িয়া মালশাদহ গ্রামের পানি নেমেই জলাশয় সৃষ্টি হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ের অতি বর্ষণের কারণে এলাকায় প্রচুর পরিমাণ পুকুর ভেসে বিভিন্ন ধরনের মাছ এ বিলে এসেছে। যে কারণে বিলের মালিকরা সাধারণ জনগণের জন্য মাছ ধরা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। এলাকার শত শত মানুষ এ বিলে মাছ ধরতে আসেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২০
এনটি