ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিজয়ের রুপালি আলোয় রঙিন রাজশাহী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০
বিজয়ের রুপালি আলোয় রঙিন রাজশাহী

রাজশাহী: বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল অর্জনের স্মৃতিবিজড়িত এবং পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বুক ভরে নিশ্বাস নেওয়ার দিন ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির আত্মগৌরবের দিন।

১৯৭১ সালের এদিনে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব-মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের।
 
৩০ লাখ শহীদের আত্মদান আর দুই লাখ মা-বোনের ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং কোটি বাঙালির আত্মনিবেদন ও গৌরবগাঁথা গণবীরত্বে পরাধীনতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পায় বাঙালি জাতি।

তাইতো দিনটি জুড়েই চলে উৎসবের ঘনঘটা। মাথা উঁচিয়ে লাল সবুজের পতাকা মুক্ত আকাশে। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় শোভা পাচ্ছে লাল-সবুজ। দিনের জাঁকালো আয়োজন শেষে রাতের রাজশাহী বিজয়ের আলোয় রাঙা। লাল-সবুজের আলোর শোভা পেয়েছে নগরীর দেয়াল। নির্বাক ভবনও সেজেছে বিজয়ের রঙে।  
নগরীর সব সরকারি ও আধা সরকারিসহ বেসরকারি স্থাপনায় এখন লাল-সবুজে ঝলমল করছে। এ চাকচিক্য চোখে পড়ার মতো। পথে পথে উড়ছে সারি সারি লাল সবুজের বিজয় কেতন। শুধু লাল আর সবুজই নয়, উৎসবের আলোয় যোগ হয়েছে সাদা, নীল ও হলুদ রঙ। এ বর্ণিল চাকচিক্য যে কারোরই চোখে পড়ার মতো। জোনাকির মতো ছোট্ট-ছোট্ট বাতিগুলো জ্বলছে আর নিভছে। কোথাও কোথাও জ্বলে থাকছে নিরবেই। এ যেনো অন্য এক নগর, ভিন্ন এক উৎসব।  

রাজশাহী শহর ঘুরে দেখা গেছে, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চারিদিকেই যেন লাল-সবুজের আলোর বন্যা বইছে। মোহনীয় সাজে সেজেছে রাতের নগরী। রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর ও নগর ভবন ছাড়াও রেলভবন, রেলওয়ে স্টেশন, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের ভবন, রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ, নিউ গভঃ ডিগ্রি কলেজ, বিদ্যুৎ ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ভবনে আলোকসজ্জা শোভা পাচ্ছে।

স্বাধীনতার ৪৯ বছর পূর্তিতে বিজয়ের আলোয় নিজেদের ভাসিয়ে বাঙালির শৃঙ্খলমুক্ত হওয়ার দিনটি প্রাণভরে উদযাপন করছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। শহরজুড়ে অসংখ্য মানুষ সন্ধ্যার পর বেরিয়ে পড়েছেন বিজয়ের রঙিন আলোয় নিজেকে ভাসিয়ে নির্মল আনন্দ উপভোগের জন্য। কেবল শহরেই নয়, গ্রাম থেকেও পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে অনেকেই এসেছেন ঝলমলে রাজশাহী দেখার জন্য। মোটরসাইকেল, রিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে ঘুরে ঘুরে রঙিন আলোকসজ্জা দেখে বেড়াচ্ছেন তারা। বিজয় দিবসকে ঘিরে এমনি উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠেছেন নগরবাসী।

সন্ধ্যায় শহীদ কামারুজ্জামান চত্বরে রঙিন আলোর সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলেন সাইদুল ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজশাহী যেমন আলোয় আলোকিত হয়েছে, সব সময় যেন আমাদের প্রিয় শহর এমন আলোয় আলোকিত থাকে। এ আলো মানুষের মনকে উদ্বেলিত করছে, আনন্দে ভাসিয়ে দিচ্ছে। এ আলোর ঔজ্জ্বল্য মনে করিয়ে দিচ্ছে জাতির এক অবিশ্বাস্য অর্জন। যে অর্জন গৌরবের, বীরত্বের।

নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট‌ এলাকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জমির হুসাইন বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনা এ দেশ, এ বিজয়। বিজয় মানে শুধু একটি পতাকা বা ভূখণ্ডই নয়। সময় এখন সেই অর্জিত ভূখণ্ডকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। বিজয় দিবস মানে এক অন্যরকম অনুভূতি।

বাংলাদেশ সময়: ০২৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০
এসএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।