মানিকগঞ্জ: কাক ডাকা ভোর থেকে সারাদিন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মতো করে মানুষের শ্রম বেচার হাট বসে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। প্রতি বছরের মতো এ বছরও হাট বসেছে শ্রমিকের।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে এসব দৃশ্য চোখে পড়ে।
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অভাবী মানুষ দলে দলে আসছেন শ্রম বেচার জন্য। এসব শ্রমিকরা দিন ভিত্তিক কিংবা সাপ্তাহিক চুক্তিতে কাজে যোগ দিচ্ছেন। মহাজন কৃষকদের সঙ্গে দরদামে বনিবনা হলে শ্রমিকরা তাদের দৈনন্দিন ব্যবহারের কাপড়-চোপড়ের পুটলি, ধান কাটার কাস্তে নিয়ে পিছু পিছু যাচ্ছেন তাদের বাড়িতে। তবে শ্রম হাটে শ্রমিক বেচাকেনার বিষয়ে দরদাম নির্ভর করে বয়সের ওপর। শারীরিকভাবে দুর্বল ও বয়স্কদের দাম যুবকদের তুলনায় অনেকটাই কম।
নাটোর থেকে আসা শ্রমিক রহিম বাংলানিউজকে বলেন, আমি গত তিন দিন ধরে মানিকগঞ্জে আসছি। এ কয়দিন কেউ কাজে নেয়নি। তবে আজ কাজে যাচ্ছি। গত বছর এ মৌসুমে শ্রমিকদের মজুরি একটু বেশি ছিলো। এ বছর মজুরি অনেকটাই কমে গেছে। মাস খানেক কাজ না করতে পারলে বাড়িতে তেমন কোন টাকা পয়সা নিয়ে যেতে পারবো না।
আকতার নামে আরও এক শ্রমিক বলেন, ‘দেশে কাম নাই তাই আইছি কামে, এসে দেখি এখানে কাম আছে তয় কামের মজুরি অনেক কম। এহন আইছি যেহেতু, কম দামে কাম কইরেও বাড়িতে কয়টা টাহা নিয়া যাইতে অইবো’।
সদর উপজেলার মুলজান এলাকার কৃষক আফসার মিয়া বলেন, আমার ১২০ শতাংশ জমির ধান কাটতে শ্রমিক নিতে আসছি, এসে দেখি শ্রমিকরা আগের বছরের মতো দামটা একটু বেশি চায়। অনেকের সঙ্গে কথা বলে তাদের সব খরচসহ প্রতিদিন সাড়ে তিনশ টাকা করে ৮ জন শ্রমিক নিয়েছি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ শাহজাহান আলী বিশ্বাস বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর রোপা আমনের ফলন ভালো হয়েছে। প্রতিবছর এ মৌসুমে জেলার বাইরে থেকে কিছু অভাবী মানুষ মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসেন শ্রম বিক্রি করতে। অন্য বছরে তুলনায় শ্রমিকের বাজার কিছু মন্দা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০
এমআরএ