ঢাকা: পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেল ড্রেজিংয়ের জন্য চুক্তিপত্র সই হয়েছে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলে জরুরি মেইনটেনেন্স ড্রেজিং প্রকল্পের চুক্তিপত্র সই হয়।
চুক্তিপত্র সই করেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর হুমায়ুন কল্লোল এবং বেলজিয়ামভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি জান ডে নুল এর প্রকল্প পরিচালক জান মোয়েন্স।
রাবনাবাদ চ্যানেলে (ইনার ও আউটার চ্যানেল) ৬.৩ মিটার গভীরতা বজায় রাখার লক্ষ্যে জরুরি মেইনটেনেন্স ড্রেজিং প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বেলজিয়ামভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি জান ডে নুল এর মধ্যে চুক্তিপত্র সই হয়।
চুক্তিপত্র অনুযায়ী, রাবনাবাদ চ্যানেলের (ইনার ও আউটার চ্যানেলে) প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১০০-১২৫ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট চ্যানেলে আনুমানিক ৯.৭৫ মিলিয়ন ঘনমিটার পলি অপসারণ করা হবে। ১৮ মাস সময়ের মধ্যে ড্রেজিং কাজ শেষ করতে প্রায় ৪৩৭.৩০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রকল্পটির ব্যয় পায়রা বন্দরের নিজস্ব তহবিল হতে সংকুলান করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পায়রা বন্দর নির্মাণ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর একটি স্বপ্নের প্রকল্প। পায়রা বন্দর ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেগবান হবে। পায়রা বন্দরসহ বিশাল সমুদ্রসীমার নিরাপত্তার জন্য পায়রা বন্দর এলাকায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঘাঁটি এবং ‘শেখ হাসিনা ক্যান্টনমেন্ট’ নির্মাণ কাজ চলমান। পায়রা বন্দরকে গতিশীল করতে ড্রেজিং কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। জরুরি মেইনটেনেন্স ড্রেজিংয়ের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাপিটাল ড্রেজিং শুরু করার কার্যক্রমও চলমান।
তিনি বলেন, আমাদের রিজার্ভের পরিমাণ ৪২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের কাজটি নিজস্ব অর্থায়নে করতে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু করতে সক্ষম হয়েছি। পদ্মাসেতু পুরাপরি চালু হওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলের পায়রা বন্দরের গুরুত্ব বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের ভৌগলিক স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করতে পারছেন বলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও চিন্তাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারছেন।
পায়রা বন্দরে ইতোমধ্যে স্থাপিত কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বিসিপিসিএল ও অন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়মিতভাবে কয়লা সরবরাহ করার লক্ষ্যে কয়লাবাহী জাহাজ চলাচল নিশ্চিত করা এবং পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেল ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সিমেন্ট, ক্লিংকার, ফুডগ্রেন, ফ্লাইঅ্যাশ, সার, কনস্ট্রাকশন মেটারিয়াল ইত্যাদি মালামাল পরিবহন সুবিধার্থে চ্যানেলের (৬.৩ মিটার গভীরতা) রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং করাই প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য।
তিনি আরও বলেন, পায়রা বন্দর ২০৩৫ সালে দেশের অর্থনীতিতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। পদ্মাসেতু ও পায়রা বন্দরের কার্যক্রম সমগ্র বাংলাদেশে বিস্তৃতি হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে। প্রধানমন্ত্রীর কর্মকাণ্ড শুধু দেশে নয়, সমগ্র বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের ‘রোল মডেল’। তার নেতৃত্বেই বংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশে পদার্পণ করবে।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর মামুনুর রশিদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০
এমআইএইচ/এএ