ঢাকা: বিশ্ব শ্রমবাজারে অভিবাসী নারী শ্রমিকের সংখ্যা মোট শ্রমিক সংখ্যার প্রায় অর্ধেক। শ্রমবাজারে অংশ নেওয়া এসব নারীর মধ্যে অনেকেই কম দক্ষতাসম্পন্ন হওয়ায় কর্মক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়েই সুরক্ষা সমস্যায় পড়েন।
শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে (ডিআরইউ) অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান লিলি জাহান, সাধারণ সম্পাদক শেখ রুমানা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসাইন, অ্যাডভোকেট ফরিদা ইয়াসমিনসহ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, অভিবাসী নারী শ্রমিকরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। কিন্তু বিভিন্ন দেশে নারী শ্রমিকরা নির্যাতন ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। কাজ করতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা। বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি নারী শ্রমিক বিভিন্ন দেশে রহস্যজনকভাবে আত্মহত্যা করছেন। অথচ এসব বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অব্যাহত নির্লিপ্ততা দুঃখজনক।
তারা বলেন, বিদেশে কাজ করতে গিয়ে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় নারী শ্রমিকদের। এগুলোর মধ্যে মালিকপক্ষ সময়মতো বেতন দেয় না, দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকা, অবসর ও বিনোদনের কোনা সুযোগ না থাকা, দেশে যোগাযোগ করতে না দেওয়া, বাথরুমে আটকে রাখা, নিরাপত্তাহীনতা এবং সুরক্ষার অভাবের কারণে শারীরিক, মানসিক, কখনো কখনো যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া, নিখোঁজ কিংবা হত্যার শিকার হওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। এছাড়া ওয়েজ আর্নার কল্যাণ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬৪টি নারী অভিবাসীর মৃতদেহ তাদের পরিবারের সদস্যরা গ্রহণ করেছে। আমরা চাই সরকার এসব বিষয়ে একটু সু-দৃষ্টি দিক।
এ সময় অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরা হয়।
দাবি গুলো হলো: ১৯৯০ সালের আন্তর্জাতিক সনদ বা চুক্তির একটি পক্ষ হিসেবে অনতিবিলম্বে নারী অভিবাসনের অন্তরায় সব বাঁধা দূর করার জন্য ২০১৩ সালের বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইনের সংশোধন করে নিরাপদ অভিবাসনের মাধ্যমে নারী অভিবাসী শ্রমিকের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিধান অন্তর্ভূক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া, বাধ্যতামূলকভাবে প্রত্যেকটি মৃতদেহের পোস্টমর্টেমের মাধ্যমে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করা এবং এ ব্যাপারে দূতাবাসের পদক্ষেপ মনিটরিং ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, যেসব ব্যক্তির দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের জবাবদিহিতা এবং শাস্তি নিশ্চিত করা, ন্যায় বিচারের স্বার্থে গন্তব্য দেশে যেসব মামলা দায়ের হয়েছে, দূতাবাসের মাধ্যমে সেসব মামলার ফলোআপ ও মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, সরকারের এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা এবং দেশে প্রত্যাগত নারী অভিবাসী কর্মীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসন ও পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আলাদা প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে নারী অভিবাসী ও তাদের পরিবারের কল্যাণ নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা অন্যতম।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২০
এইচএমএস/আরআইএস