ফেনী: ফেনীতে পাকা করা হচ্ছে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবর।
গণপূর্ত বিভাগ সূত্র জানায়, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ফেনী জেলায় ৫২ জন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম-ঠিকানা পাঠানো হয়।
মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ৫২ জন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ফেনী সদর ১৬ জনের মধ্যে ৮ জনের, পরশুরাম উপজেলায় ১১ জনের মধ্যে ৪ জনের, ফুলগাজী উপজেলায় ১০ জনের মধ্যে ৪ জনের, ছাগলনাইয়া উপজেলায় ৪ জনের মধ্যে ১ জনের, সোনাগাজী উপজেলায় ৭ জনের মধ্যে ২ জনের এবং দাগনভূঁঞা উপজেলায় ৪ জনের মধ্যে ২ জন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জানায়, ফেনীতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধি পাকাকরণ প্রকল্পের আওতায় ৩১টি কবর পাকাকরণ কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, সোনাগাজী ও দাগনভূঁঞার শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর পাকাকরণের জন্য দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় এবং গত ফেব্রুয়ারিতে ঠিকাদার নিয়োগ করে কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
ফেনী সদর উপজেলার কবরগুলোর জন্য গত সেপ্টেম্বর মাসে ঠিকাদার নিয়োগ ও কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদাররা ইতোমধ্যে ৮০-৯০ শতাংশ কাজ শেষ করেছেন। কোনো কোনোটিতে শুধু নামফলক লাগানোর কাজ বাকি রয়েছে। প্রতিটি সমাধি পাকাকরণের জন্য গড়ে দুই লাখ ১০ হাজার টাকা করে ধরা হয়েছে।
ফেনী পৌরসভার পশ্চিম উকিলপাড়ার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক মজুমদারের ভাগিনা আরিফ জাহান জানান, স্বাধীনতার প্রায় অর্ধশতাব্দি পর হলেও সরকার ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবরগুলো পাকাকরণ করায় তারা বেশ খুশি হয়েছেন।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবদুল মোতালেব জানান, সরকারের এ উদ্যোগ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহিত করেছে।
তিনি আশা করেন, যেসব শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবর শনাক্ত করা যায়নি তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যেও যেকোনো ধরনের স্মৃতিফলক করা যায় কিনা সেটাও দেখতে হবে।
ঠিকাদার মো. ইব্রাহিম জানান, তিনি জেলার ফুলগাজী, পরশুরাম ও ফেনী সদর উপজেলার মোট ১৪ জন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর পাকাকরণের কাজ পেয়েছেন। ১২টির কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু ফুলগাজী উপজেলার গাবতলী গ্রামে ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় সমাহিত দু’জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধি নির্মাণ কাজ ৫০ শতাংশ হওয়ার পর ভারতীয় সীমান্তরক্ষীর (বিএসএফ) বাধার কারণে বন্ধ রয়েছে। ওই দুইজন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা হচ্ছেন ফুলগাজীর দক্ষিণ আনন্দপুর গ্রামের শহীদ আইয়ুব আলী ও নিলক্ষ্মী গ্রামের শহীদ সিরাজুল হক।
তিনি অভিযোগ করেন, কাজ প্রায় শেষপর্যায়ে হলেও ঠিকাদারকে এ ধরনের কোনো বিল দেওয়া হয়নি।
ফেনী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাদ মোহাম্মদ আন্দালিব জানান, যেসব শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর শনাক্ত হয়েছে, সেগুলোর কাজ ৮০-৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় থেকে এখনো অর্থ ছাড় করা হয়নি। ফলে ঠিকাদরদের কোনো বিল পরিশোধ করা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২০
এসএইচডি/এএটি