ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বছরের প্রথমদিন পদ্মা সেতুর সঙ্গে  

সাজ্জাদ হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২১
বছরের প্রথমদিন পদ্মা সেতুর সঙ্গে   পদ্মাপাড়ে পদ্মাসেতুর সঙ্গে। ছবি: বাংলানিউজ

মুন্সিগঞ্জ: ২০২০ সালের আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল করোনা ও বন্যা। পুরো বছরটিই কেটেছে ভয়ের মধ্য দিয়ে।

করোনাকালে ঘরবন্দি মানুষদের সময় খুব খারাপ কেটেছে। অনেকেই হারিয়েছেন তার প্রিয়জন আবার অনেকে হয়েছেন অসুস্থ। ভালো খবর পাওয়ার আশা থেকে বঞ্চিত ছিলো পুরো দেশ। তবে গেল বছরের শেষের দিকে ভালো খবর দিয়েছে পদ্মা সেতু।  

সব স্প্যান বসিয়ে পদ্মা সেতুর পুরো অবকাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে। তাই সারা দেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল পদ্মা সেতু। এর জন্য সেতু নিয়ে আগ্রহের কোনো কমতি নেই কারো। তাই ২০২১ সালের প্রথমদিন ঘরে বসে না থেকে প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে আনন্দ উপভোগ করার জন্য পদ্মা সেতু ছিল সবার পছন্দের তালিকায়। আর সাপ্তাহিক ছুটিতে করোনাময় পুরনো বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে মুন্সিগঞ্জের পদ্মার পাড়ে ছিলো মানুষের ভিড়।  

...শুক্রবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মা সেতু দেখতে ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসছেন। ব্যক্তিগত গাড়ি ও ভাড়ায় চালিত যানবাহনে করে পরিবার-পরিজন ও বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। শীত উপেক্ষা করে লৌহজং উপজেলার নদী তীরবর্তী বিভিন্ন পয়েন্টে দুপুর থেকে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ছুটির দিন হওয়ায় এমনিতেই ভিড় বেশি, তার ওপর যোগ হয়েছে নতুন বছরের প্রথম দিন।  

একসঙ্গে পদ্মা সেতুর পূর্ণাঙ্গ রূপ দেখার আকাঙ্ক্ষা তো আছেই। দর্শনার্থীরা দূর থেকে সেতু দেখেছেন। প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়েও সেতুর আশপাশ ঘুরে দেখেছেন। পদ্মা সেতু দেখতে মাওয়া মৎস্য আড়তঘাটে দর্শনার্থীদের বেশি ভিড় জমেছে। আর তাই এলাকাজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।  

এজন্য পদ্মাপাড়ে বসেছে নাগরদোলা, পাশাপাশি বৃদ্ধি পেয়েছে খাবার দোকানের সংখ্যাও। দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বেশি তাই বেচাকেনা বেড়ে গিয়েছে। স্বপ্নের সেতুটি একনজর দেখতে অনেক দূর থেকে এসে খুশি তারা। এ সময় অনেকেই সেতু পেছনে রেখে সেলফি তুলছেন। নিরাপত্তার কারণে সেনা সদস্যরা প্রকল্প এলাকার ভেতর কাউকে প্রবেশ করতে দেননি।

কুমিল্লা জেলার বেসরকারি চাকরিজীবী আওলাদ হোসেন বলেন, সাপ্তাহিক ছুটি ও বছরের প্রথম দিনকে উদযাপন করতে কয়েকদিন ধরেই পরিকল্পনা চলছিল সহকর্মীদের সঙ্গে। এরপর গাড়ি ভাড়া নিয়ে ৮ জন সহকর্মী মুন্সিগঞ্জের পদ্মাপাড়ে এসেছি। দুপুর থেকে এখানে ঘুরে বেড়াচ্ছি। খুব কাছ থেকে পদ্মা সেতু দেখতে পেরে আমরা সবাই খুব আনন্দিত।

...ঢাকার বাসিন্দা সুমাইয়া জাহান জানান, খুব ইচ্ছে ছিল পদ্মা সেতুর সঙ্গে সেলফি তোলার। যা আজকে পূরণ হয়েছে। বছরের প্রথমদিন পদ্মা সেতু দেখে মুগ্ধ।

কেরানীগঞ্জ জেলা থেকে আসা সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০২০ সাল কেটেছে সবার ভয়ের মধ্য দিয়ে। সবসময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে এসেছি। মাওয়াঘাটে দুপুরের খাবার শেষে বিকেলে এ জায়গায় এসেছি। এখান থেকে খুব সুন্দরভাবে পদ্মা সেতু দেখা যাচ্ছে। নতুন বছর যাতে আজকের দিনের মতো আনন্দে কাটে এই প্রত্যাশা করছি।  

ট্রলার চালক ইয়ামিন হোসেন জানান, সকাল থেকে অনেকেই এখানে ঘুরতে আসছেন। ট্রলার ভাড়া করে সেতুকে খুব কাছ থেকে দেখতে আগ্রহী অনেকে। পদ্মায় ২০-২৫টি ট্রলার রয়েছে, সেগুলোতে করে দর্শনার্থীদের ঘুরিয়ে নিয়ে আসা হয়। তাদের ঘোরাতে পেরে আমরাও আনন্দিত।  

ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানের মালিক সাত্তার হোসেন জানান, মাওয়া মৎস্য আড়ত অংশ দিয়ে খুব ভালোভাবে পদ্মা সেতু দেখা যায়। এর জন্য এখানে অনেকে ভিড় করেন। খাবারের কোনো দোকান এখানে না থাকায় একটি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেচাকেনাও ভালোই হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।