ঢাকা: বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের আট ও নয় তলায় উঠেই চোখে পড়লো শিশুদের এক ভিন্ন রাজ্য। কেউ নাগরদোলায়, কেউ ঘোড়ার পিঠে, কেউ বাম্পার কারে চড়ে উল্লাসে মেতে উঠেছে।
শুক্রবার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর বৃহত্তম ইনডোর থিম পার্ক টগি ওয়ার্ল্ড ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
বসুন্ধরা সিটির ৮ম ও ৯ম তলায় প্রায় ৩৭ হাজার বর্গফুট আয়তনের দুটি বিশাল ফ্লোর নিয়ে সাজানো টগি ওয়ার্ল্ড পার্কটি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত বছরের ১৯ মার্চ বন্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ ৯ মাস ১১ দিন পর খোলার সঙ্গে সঙ্গে শিশু-কিশোররা টগি ওয়ার্ল্ডে আসতে পেরে উচ্ছ্বসিত।
টগি ওয়ার্ল্ডের ম্যানেজার (অপারেশনস) মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত বছরের ১৯ মার্চ থেকে বন্ধ রাখা হয়। নতুন বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি আবার খুলেছে টগি ওয়ার্ল্ড। ৯ মাস ১১ দিন পর খোলার সঙ্গে সঙ্গে শিশুরা তাদের অভিভাবকদের নিয়ে টগি ওয়ার্ল্ডে হাজির হয়েছে। আমাদের জাইরোস্কোপ, মিনি টাওয়ার, বাম্পার কার, লিটল প্লেনসহ মোট ১৫টি রাইড, ৪৩টি গেমস, ৩টি সফট প্লে গ্রাউন্ড এবং একটি ৮ লাইনের কিডস বোলিং রয়েছে। ধারণ ক্ষমতা ৫ হাজার। এছাড়া আছে ৫০টি শিশু-কিশোর ধারণক্ষমতার একটি পার্টি রুম, যেখানে জন্মদিনের পার্টিসহ নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করা যাবে।
দীর্ঘদিন পরে মা-বাবার সঙ্গে টগি ওয়ার্ল্ডে এসেছিল নয় বছর বয়সী চন্দন। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে শিশুটি বলে, ৯ মাস ধরে অপেক্ষা করছি কখন খুলবে টগি ওয়ার্ল্ড। আসার পর খুব ভালো লাগছে।
১০ বছরের সামিয়া জানালো, স্কুল বন্ধ থাকার কারণে বাইরে একদমই যেতে পারে না সে। টগি ওয়ার্ল্ড খোলার খবর পেয়েই চলে এসে তার খুব ভালো লাগছে।
টগি ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ ফি ৫০ টাকা। চার ফুটের কম উচ্চতার শিশুদের প্রবেশ ফি দিতে হয় না। যে কোনো ৫টি রাইড ৩৫০টাকা, ৮টি রাইড ৫৫০ টাকা। ৫ কয়েনের গেম ৩৫০ টাকা এবং ৮ কয়েনের গেম ৫৫০ টাকা। যেকোনো ৪টি রাইড ও ৩টি গেম ৫০০ টাকা।
টগি ওয়ার্ল্ডে আসা অভিভাবক আজাহার আলী বলেন, করোনার কারণে কোথাও যাওয়া হয় না। দীর্ঘদিন পরে টগি ওয়ার্ল্ড খোলার খবর পেয়ে বাচ্চাদের নিয়ে চলে এসেছি। ওরা এখানে ব্যাপক আনন্দিত।
প্রতি রোববার থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে টগি ওয়ার্ল্ড। শুক্র ও শনিবার সকাল ১১টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত খোলা। সাপ্তাহিক বন্ধ মঙ্গলবার।
জানতে চাইলে টগি ওয়ার্ল্ডের সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার বিশ্বজিৎ কুমার পাল বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত বছরের ১৯ মার্চ থেকে টগি ওয়ার্ল্ড বন্ধ রাখা হয়। দীর্ঘ ৯ মাস ১১ দিন বন্ধ থাকার পরে নতুন বছরের প্রথম দিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকারের স্বাস্থ্য বিধি মেনে রাইড ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরেও চালু করায় আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। টগি ওয়ার্ল্ড অভিভাবক ও বাচ্চাদের কাছে বিনোদনের নিরাপদ আস্থার প্রতীক। অনেক দিন পর এখানে এসে আনন্দে মেতেছে শিশুরা।
রাজধানীর চার দেয়ালে বন্দী জীবন আর মাঠবিহীন বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা শিশুদের আনন্দ দিতে প্রতিষ্ঠার পর থেকে টগি ওয়ার্ল্ড হয়ে উঠেছে শিশুদের বিনোদনের অন্যতম প্রিয় স্থান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২১
এসই/এমজেএফ