ঢাকা: আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার বিরোধিতার মধ্যেও রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে হার্ডলাইনে ছিল সরকার। সে কারণে ২০২০ সালের শেষভাগে দুই দফায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর নিয়ে আলোচনা ছিল ২০২০ সাল জুড়ে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা শুরু থেকেই সরকারের এই উদ্যোগের বিরোধিতা করে আসছিল। তবে সরকার রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠাতে হার্ডলাইনে ছিল। সে কারণে বছরের শেষ ভাগে দুই দফায় ৪ ডিসেম্বর ১৬৪২ আর ২৯ ডিসেম্বর ১৮০৪ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পাঠানো হয়।
রোহিঙ্গাদের ভাসানচর পাঠাতে কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগ যেন না করা হয়, সে বিষয়ে সোচ্চার ছিল আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। তবে সরকার থেকে স্পষ্ট করা হয়, কোনো রোহিঙ্গাকে জোর করে ভাসানচরে পাঠানো হয়নি। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভাসানচর দ্বীপ পুরোপুরি সুরক্ষিত। আম্পানের সময়ও এই দ্বীপে কোনো ক্ষতি হয়নি। সেখানে আবাসন, সুপেয় পানি, চিকিৎসাসহ নানা ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।
জাতিসংঘের দাবি, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে স্থানান্তরে সংস্থাটিকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর বিষয়ে শুরু থেকেই জাতিসংঘকে অবহিত করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের জোর করে ভাসানচরে পাঠানোর কোনো প্রশ্নই উঠে না।
এদিকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচর পাঠানো নিয়ে আপত্তি তুলেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় সেখানে যেতে আগ্রহী নয় বলে দাবি করেছে সংস্থা দু’টি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সংস্থা দু’টির দাবি পুরোপুরি নাকচ করা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে কোনোভাবেই জোর করে পাঠানো হচ্ছে না। তারা স্বেচ্ছায় যাচ্ছেন।
আর বিদেশিদের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের প্রতি ইউরোপ-আমেরিকার এত দরদ থাকলে, তারা তাদের দেশে নিয়ে যান না কেন।
এদিকে নভেম্বর মাসে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে বিপুল ভোটে চতুর্থবারের মতো রেজুলেশন গৃহীত হয়। ওআইসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথভাবে জাতিসংঘে রেজুলেশনটি উত্থাপন করে। এতে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে ১০৪টি দেশ। রেজুলেশনটির পক্ষে ভোট দেয় ১৩২টি দেশ, বিপক্ষে দেয় ৯টি আর ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে ৩১টি দেশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২১
টিআর/এইচএডি