ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কুষ্টিয়া মেডিক্যাল নির্মাণ প্রকল্প তদন্তে ফের আইএমইডি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২১
কুষ্টিয়া মেডিক্যাল নির্মাণ প্রকল্প তদন্তে ফের আইএমইডি কুষ্টিয়া মেডিক্যাল নির্মাণ প্রকল্প পরিদর্শনে আইএমইডি। ছবি: বাংলানিউজ

কুষ্টিয়া: ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি, সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত, স্বাস্থ্য ও সংস্থাপন বিভাগের অব্যবস্থাপনা ও অসচ্ছতা তদন্তে ফের কাজ শুরু করেছে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প ‘বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ’ (আইএমইডি)।  

আইএমইডি প্রধান প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্তকারী দল তদন্ত কাজ শুরু করেছে।

তদন্তকারী দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ) মো. সাইফুর রহমান, স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমান, গণপূর্ত বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. শওকত আলী এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. আব্দুর রউফ।

তদন্তকারী দল সরেজমিন নির্মাণাধীন কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ প্রকল্প সাইট পরিদর্শন করেন। পরে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সব দাপ্তরিক নথিপত্র তলব করে তা পর্যবেক্ষণ করেন। এসময় সেখানে প্রকল্প শুরুর পর থেকে অদ্যাবদি দায়িত্ব পালনকারী প্রকল্প পরিচালকগণ, সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী দল।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) তদন্ত শেষে তদন্তকারী দল ও আইএমইডি প্রধান প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তীর কাছে তদন্ত বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এ মুহূর্তে তদন্তাধীন বিষয়ে বিশদ কিছু বলার সুযোগ নেই। তবে এটুকু বলি আমরা প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সার্বিক বিষয়গুলি বিবেচনায় নিয়ে খতিয়ে দেখছি। ” 
 
জানা যায়, ২০১২ সালে শুরু হওয়া প্রকল্প কাজ নয় বছরেও শেষ না হওয়ায় গত ৫ জানুয়ারি ঢাকায় শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় প্রকল্পের মেয়াদ আরও চার বছর বাড়ানোর প্রস্তাব ফেরত পাঠিয়ে ফের তদন্তের নির্দেশ দেন আইএমইডিকে।  

এর ফলে নির্ধারিত নির্মাণকালের প্রায় তিনগুণ সময় অতিবাহিত এবং সরকারি অর্থ ব্যয়সহ অপচয়ের কারণে ঝুলে থাকা নির্মাণাধীন কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নে আবারও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন সচেতন নাগরিক কমিটি সনাক’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম টুকু।

প্রকল্প সূত্র জানা যায়, কুষ্টিয়াসহ আশপাশের ৫ জেলার মানুষের অন্তত ২০ বছর পরের চাহিদা মাথায় রেখে ২০১২ সালের ৩ মার্চ ২৭৫ কোটি টাকার প্রাক্কলন ব্যয়ে একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা অনুমোদিত নকশা পরিবর্তন, দরবৃদ্ধি করে কার্যাদেশ দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় বিগত ২০১৭ সালের মধ্যভাগে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প ‘বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ’ (আইএমইডি) তদন্ত করেছিলেন। ওই সময় তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকল্পটির নির্মাণাধীণ একাডেমিক, হাসপাতাল, ছাত্রাবাস ও আবাসিকসহ সবকটি ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেই নকশা পরিবর্তনসহ নানা অনিয়মের সত্যতা পেয়েছিলো তদন্তকারী দল। ওই প্রতিবেদনে প্রকল্পটির প্রায় সব ক্ষেত্রেই বেধে দেওয়া ব্যয়ের সীমা লঙ্ঘন করে অনুমোদন না নিয়েই অর্থ ব্যয় করে সরকারি ক্রয় আইনের ‘গুরুতর লঙ্ঘন’ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়া গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, নির্মাণাধীণ কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ প্রকল্পটি ঘিরে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তদন্ত চলছে। বলতে পারেন আমি নিজেই আজ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছি। ফলে তদন্তাধীন এই বিষয়ে কোনো কিছুই বলার এখতিয়ার আমার নেই।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।